মা বিদেশে আর বাবা ঢাকায় কাজ করেন। নানীর আশ্রয়ে থাকা দুই শিশুর নানীও ঢাকা চলে গেছেন তার অসুস্থ মেয়ের কাছে
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরে মা-বাবার স্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়ে পালিয়ে যাওয়া দুই শিশুকে উদ্ধার করে স্বজনের কাছে সমজে দিয়েছে পুলিশ। ফলে অজানা বিপদের আশঙ্কা থেকে রক্ষা পেয়েছে ৮ বছর আর ১০ বছর বয়সী দুই শিশু।
হবিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ জানায়, সিয়াম আহমেদ (১০) ও ইমরান আহমেদ (৮) আপন দুই ভাই। হবিগঞ্জ শহরের হরিপুর এলাকায় নানার বাড়িতে থাকে। তাদের মা রুজিনা আক্তার দেড় বছর আগে ভাগ্য অন্বেষনে বিদেশে জর্ডানে পাড়ি জমান। গরীব বাবা স্বপন মিয়া ঢাকায় মাছের আড়তে কাজ করেন। মাঝে মধ্যে বাচ্চাদের দেখতে আসেন। দুই অবুঝ সন্তান মা-বাবার আদর থেকে বঞ্চিত হয়ে নানা-নানীর আশ্রয়ে বসবাস করে। প্রায় ১৫ দিন পূর্বে তাদের নানী নিজের অসুস্থ আরেক মেয়েকে দেখতে ঢাকা চলে যান। নানীর অনুপস্থিতিতে অবুঝ দুই ভাই প্রায় অসহায় হয়ে পড়ে। গত ৯ নভেম্বর সোমবার সকালে দুই ভাই বৃদ্ধ নানাকে না জানিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে বের হয়ে যায়। পাড়ায় তাদের দুই সহপাঠীকে পেয়ে বলে নানীর কাছে ঢাকা যাচ্ছে। এরপর থেকে তারা দুই ভাই নিখোঁজ। অবুঝ দুই ভাইকে তাদের নানা ও পাড়াপড়শীরা খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় জিডি করেন। দুই ভাইয়ের সন্ধানে পুলিশ নানা স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। দুই ভাই অজানা পথে চলতে চলতে বাহুবলের মিরপুর এলাকার দিকে চলে যায়। তাদের আচরণে সন্দেহ হলে এক ব্যক্তি তাদের জিজ্ঞাসা করে হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন। তিনি বাহুবল থানাধীন কামাইছড়া পুলিশ ক্যাম্পে বিষয়টি জানালে ফাঁড়ির এসআই সেলিম আহমেদ ওই দুই ভাইকে কামাইছড়া ক্যাম্পে নিয়ে যান।
খবর পেয়ে হবিগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রবিউল ইসলাম এর নির্দেশনায় ওই দুই শিশুকে কামাইছড়া ক্যাম্প থেকে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার নিয়ে আসে পুলিশ। রবিউল ইসলাম দুই ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বুঝতে পারেন মূলত তারা অভিভাবকহীন হয়ে পড়ায় একত্রে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। ওইদিনই রাতে দুই ভাইকে তাদের নানার জিম্মায় হস্তান্তর করেন তিনি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন- প্রত্যেক অভিভাবকের উচিত নিজ নিজ সন্তানদের প্রতি স্নেহ মমতা ও খোঁজখবর রাখা। দুর্ভাগ্যক্রমে দুই শিশু সন্তান যদি কোন দুষ্ট চক্রের কবলে পড়তো তাহলে হয়তো তাদের জীবনে দুর্দশা নেমে আসতো। তিনি সবাইকে সচেতন হওয়ার আহবান জানান।