মোঃ আলাউদ্দিন আল রনি ॥ মাধবপুরে কিশোর গ্যাং এর সদস্যদের চিনে ফেলায় টমটম চালক আউয়ালকে র্নিমম ভাবে খুন করে নির্জন চা বাগানে ফেলে টমটম নিয়ে পালিয়ে যায় কিশোর দৃর্বৃত্তরা। রবিবার সন্ধ্যায় কিশোর গ্যাং-এর ৩ সদস্য হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নূরুল হূদা চৌধুরীর আদালতে এবং ২ সদস্য সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সুলতানউদ্দিন প্রধানের আদালতে আউয়াল হত্যার স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয়।
একটি মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর গোলাম মোস্তফা রবিবার ভোর রাতে উপজেলার বেলঘর ও সন্তোষপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে বনগাঁও গ্রামের ফুরুক মিয়ার ছেলে মোঃ জুবায়েদ মিয়া (১৬), বেলঘর গ্রামের আদম আলীর ছেলে মোঃ মোশারফ মিয়া (১৭) ও একই এলাকার নাসির মিয়ার ছেলে মোঃ সজীব মিয়া (১৭) নামে কিশোর কিলারকে গ্রেফতার করে। এ সময় মোবাইল, হত্যার কাজে ব্যবহৃত ছোরা ও টমটম উদ্ধার করা হয়। অপরদিকে সোমবার ভোররাতে উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে ওই গ্রামের আশ্রব আলীর ছেলে মোঃ রাষ্ট্র মিয়া ওরফে তাজুল ইসলাম (১৭) ও জগদিশপুর ইউনিয়নের বড়ধূলিয়া গ্রামের লাল খাঁ’র ছেলে মোঃ হাবিবুর রহমানকে (১৭) গ্রেফতার করেন।
রবিবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নূরুল হূদা চৌধুরীর আদালতে হাজির করলে ৩ কিশোর অপরাধী এবং সোমবার সন্ধ্যায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সুলতানউদ্দিন প্রধানের আদালতে ২ কিশোর অপরাধীকে হাজির করলে টমটম চালক আউয়ালকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হাত-পা বেঁধে চুরিকাঘাত করে জবাই করে খুন করে লাশ নির্জন চা বাগানে ফেলে মোবাইল ফোন ও টমটম নিয়ে যায় বলে স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবান বন্ধি দেয়। এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে ৭জন এবং টমটম বেচাকেনার সঙ্গে আরও ২ জন জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেন।
তেলিয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর গোলাম মোস্তফা জানান গত ১৭ মার্চ একটি সংঘবদ্ধ ইজিবাইক চোর চক্র উপজেলার বেঙ্গাডোবার গ্রামের আরিছ মিয়ার ছেলে আব্দুল আউয়ালকে (২০) চা বগানে বেধে রেখে তার ইজিবাইকটি ছিনতাই করবে বলে পরিকল্পনা করে পরদিন ১৮ মার্চ তারা চা বাগানে ঘুরতে যাবে বলে ভাড়া করে আব্দুল আউয়ালকে নিয়ে যায় সুরমা চা বাগানের কিবরিয়াবাদ এলাকায়। চা-বাগানের ভেতরে গিয়ে আব্দুল আউয়ালকে বেধে ফেলার পরে তারা বুঝতে পারে সে তাদের চিনে ফেলেছে ফলে তারা তাকে হত্যা করে লাশ চা বাগানের নির্জন ছনছড়ি এলাকায় ফেলে রেখে মোবাইল ও ইজিবাইকটি নিয়ে পালিয়ে যায়। ১৯ তারিখ টমটমের মালিক কামাল মিয়া থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন। ওইদিন রাতে সুরমা চা-বাগানের ছনছড়ি এলাকা থেকে গলাকাটা আউয়ালের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ব্যাপারে আউয়ালের মামা শাহজাহান অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল হোসেন জানান- আউয়াল হত্যাকান্ডে পরদিনই চৌমুহনী এলাকা থেকে টমটমটি উদ্ধার করে পুলিশ। বাকী অপরাধীদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।