স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজমিরীগঞ্জের নোয়াগড় গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনার জের ধরে নিজের পক্ষের লোককে হত্যা করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন সাবেক ইউপি সদস্য শাহজাহান মিয়া।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্র জানায়, নোয়াগড় গ্রামের সাবেক মেম্বার শাহজাহান মিয়া ও আক্তার হোসেনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের জের ধরেই শনিবার বিকেলে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষের খবর পেয়ে আজমিরীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৩ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। আহতদের মধ্যে আক্তার হোসেনের পক্ষের টেটাবিদ্ধ আবিদুল মিয়াকে হবিগঞ্জ আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্মরত চিকিৎসক আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। পরবর্তীতে সেখানে তার অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ওসমানি মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানেও তার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। এছাড়াও আক্তার হোসেনের পক্ষের টেটাবিদ্ধ দিলু মিয়াকে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
আক্তার হোসেন অভিযোগ করে জানান, তার ভাতিজা আবিদুল মিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক। চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসা সেবা দিয়েও তাকে শঙ্কামুক্ত করতে পারছেন না। এছাড়াও আমার পক্ষের আরো কয়েকজন জখমীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ পরিস্থিতিতে থেকে রক্ষা পেয়ে শাহজাহান মেম্বার তার পক্ষের ক্যান্সারে আক্রান্ত আয়াত আলী, শেফা আক্তার, ফেরা বিবি, অখিলা বিবি এর মধ্যে যে কোন একজনকে হত্যা করবে বলে পরিকল্পনা করছে। তিনি বিষয়টি তদন্ত করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান। নোয়াগড় গ্রামের বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে পুলিশ তদারকি করে দেখছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) শেখ মোঃ সেলিম।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোঃ সেলিম জানান, নোয়াগড় গ্রামের সাবেক মেম্বার শাহজাহান মিয়া ও আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শাহজাহান মেম্বার গংরা নিজেদের লোক হত্যা করে প্রতিপক্ষতে ফাঁসাতে পারেন এমন তথ্য আমরা সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছি। এ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। তিনি আরো বলেন- সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে পুলিশ আহত হওয়ায় এ ব্যাপারে উভয় পক্ষের ৩০ জনকে আসামী করে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অপর একটি সূত্র জানায়, গত বছর আগ্নেয়াস্ত্রসহ সাবেক মেম্বার শাহজাহান মিয়াকে আটক করে র‌্যাব। এর আগে ২০১৮ সালে একটি হত্যা মামলায় র‌্যাব তাকে গ্রেফতার করে।