এরশাদের মৃত্যুতে হবিগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির শোক

এসএম সুরুজ আলী ॥ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আর নেই। রবিবার সকাল পৌনে ৮টায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, সন্তান, ভাই, বোনসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। সাবেক এই রাষ্ট্রপতির মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর স্ত্রী জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ, ছোট ভাই জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ দলের ঊর্ধ্বতন নেতারা সিএমএইচে ছুটে যান। গতকাল বাদ জোহর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট জামে মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এরশাদের দ্বিতীয় জানাজা হবে। বেলা ১১টায় এরশাদের মরদেহ নেয়া হবে কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে। বাদ আসর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে এরশাদের তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। রাতে সিএমএইচের হিমঘরে এরশাদের মরদেহ রাখা হবে। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় এরশাদের মরদেহ হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হবে রংপুরে। সেখানে জানাজার পর মরদেহ নিয়ে আসা হবে ঢাকায়। মঙ্গলবার ঢাকার সামরিক কবরস্থানে এরশাদের দাফন হবে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বর্তমান জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে হবিগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টি অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জাপা’র নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এরশাদের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। নেতাকে শেষবারের মত দেখার জন্য হবিগঞ্জ থেকে জাপা ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঢাকায় ছুটে যান। আগামী দিন হবিগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা নেতাকর্মীরা কালো ব্যাচ ধারণ করবে। দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকার সঙ্গে কালো পতাকা থাকবে। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য, হবিগঞ্জ জেলা সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং হবিগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক শংকর পাল বলেন- পল্লীবন্ধু হুসেইন এরশাদ রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পর এদেশে উন্নয়নের সূচনা করেন। বিশেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন তার আমলে ঘটে। তিনি সারা বাংলাদেশে যেমন উপজেলা প্রতিষ্ঠা করেছেন। তেমনি হবিগঞ্জ জেলার ৮টি উপজেলা প্রতিষ্ঠা, সার্কিট হাউজ প্রতিষ্ঠা, জেলা পরিষদ, বানিয়াচঙ্গের এরশাদ উচ্চ বিদ্যালয়, বর্তমানে আদর্শ উচ্চ হিসেবে যেটি প্রতিষ্ঠিত, লাখাই থেকে বামৈ উপজেলা স্থানান্তর করেন। তিনি হবিগঞ্জকে মওকুমা থেকে জেলা রূপান্তরিত করেন। খোয়াই নদীর মধ্য স্থানে ব্রীজ প্রতিষ্ঠা করেন। হবিগঞ্জ-বানিয়াচঙ্গ সড়কে এরশাদ সরকার ক্ষমতা থাকাকালীন প্রথমে ইট লাগানো হয়। আন্তঃনগর ট্রেন চালু করেন। তিনি হবিগঞ্জেও আন্তঃনগর ট্রেন সার্ভিস চালু করেন। এছাড়াও পল্লীবন্ধু শাসন আমলেই হবিগঞ্জে পল্লীবিদ্যুত সংযোগ চালু হয়েছিল। তিনি হবিগঞ্জের অসংখ্য রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করেছেন। পাশাপাশি ঢাকা সিলেট মহাসড়কের উন্নয়নের যাত্রাও তার আমলে শুরু হয়েছিল। পল্লীবন্ধু এরশাদের এই অবদান আজীবন হবিগঞ্জবাসী স্মরণ রাখবে। আমরা তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। এছাড়াও শোক প্রকাশ করেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু, জেলা জাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন খান, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদ, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সম্পাদক প্রকৌশলী এমএ মুমিন চৌধুরী বুলবুল, সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল মুক্তাদীর চৌধুরী অপু, জাতীয় যুবসংহতির কেন্দ্রীয় নেতা কাজল আহমেদ, অ্যাডভোকেট শিবলী খায়ের, জাহাগঙ্গীর আলম চৌধুরী, হবিগঞ্জ জেলা যুবসংহতির সভাপতি প্রভাষক এসএম লুৎফুর রহমান, জাতীয় ছাত্র সমাজের সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ময়না, জেলা যুবসংহতির সাধারণ সম্পাদক শেখ জালাল, গাজী মিজবা উদ্দিন, জালাল উদ্দিন আহমেদ, আব্দুছ ছালাম মেম্বার, মোঃ তালেব আলী, জাহাঙ্গীর আলম, হাজী ফরিদ উদ্দিন, জোবায়েদ হোসেন, মুরাদ আহমদ, মোঃ আরব আলী, ফতেহ আলম, শেখ রইছ আলী, সুহেল আহমেদ রানা, জুয়েল আহমেদ জীবন, সিরাজুল ইসলাম, হিফজুর রহমান, শাহ আলম, হিফজুর রহমান প্রমূখ।