
মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি করলে ৩৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক দিতে হবে। এই ঘোষণা পর হবিগঞ্জের মাধবপুরে গড়ে উঠা পোশাক শিল্প কারখানার মালিকরা উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে পড়েছেন। এমনিতেই শিল্পের কাঁচামাল, শ্রমিক মজুরি বৃদ্ধি, জ্বালানির স্বল্পতা, বিদ্যুৎ সমস্যা, ক্রয়াদেশ কমে যাওয়া সব মিলে তৈরি পোশাক শিল্প গভীর সংকটের মধ্যে রয়েছে। নতুন করে ৩৫ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির কারণে এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি করতে হলে পোশাক মালিকদের ৫০ শতাংশ কর দিতে হবে। এর ফলে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র পোশাক রপ্তানি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। ভিয়েতনাম, কেনিয়া, ইন্দোনেশীয়ার দিকে ক্রেতারা ঝুঁকে যাবে। এই পোশাক খাত থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প বড় ধরণের লোকসানে পড়বে। তৈরি পোশাক বিদেশে রপ্তানি ব্যাহত হলে মালিক আর্থিক সংকটে পড়বে। তখন বাধ্য হয়ে কারখানা বন্ধ রাখতে হবে। কারখানা বন্ধ হলে এ খাতে সংশ্লিষ্ট সবাই ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তাই সরকারকে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক আলোচনা করে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। কারণ জাতীয় অর্থনীতিতে তৈরি পোশাক শিল্পের বড় অবদান রয়েছে।
মাধবপুরের তেলিয়াপাড়ায় গড়ে উঠা ফারইস্ট স্পিনিংয়ের পরিচালক জামান উদ্দিন জানান, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প এখন গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর পরিস্থিতি জঠিল হয়ে পড়েছে । এই শুল্ক ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় সরকার দ্রুত কূটনৈতিক সমাধানের দিকে না এগোলো বাংলাদেশের তৈরি পোশাকখাত মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। হবিগঞ্জ মাধবপুরে দেশের নামীদামী রপ্তানিকারক পোশাক শিল্প গড়ে উঠেছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র সহ অনেক দেশে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে। মাধবপুর অনেক নারী শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।
হবিগঞ্জের সায়হাম গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ ফয়সল বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অতিরিক্ত শুল্ক ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হলে দেশের তৈরি পোশাক খাত গভীর সংকটে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ক্রয়াদেশ হাত ছাড়া হয়ে যাবে। এতে বিপুল সংখ্যক নারী শ্রমিক তাদের চাকরি হারাতে পারেন। এই খাতের সাথে যুক্ত সব সেক্টর ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। এ নিয়ে শিল্প মালিকরা খুব হতাশ। তাই ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি অনুরোধ, সরকার যেন আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করেন। কারণ সরকার এই সমস্যা কূটনৈতিকভাবে সমাধা করতে ব্যর্থ হলে দেশের আর্থিক খাত দুর্বল হয়ে পড়বে। নির্বাচিত সরকার তখন দেশ চালাতে বেগ পেতে হবে।