নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ লাখাই উপজেলার মোড়াকরি সেচ প্রকল্পের ম্যানেজার নিয়োগ নিশ্চিত করার কথা বলে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। প্রকল্প না পেয়ে ওই টাকা ফেরতের জন্য স্থানীয় মুরুব্বীয়ান ও উপজেলা বিএনপি নেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন ওই ব্যবসায়ী।
সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে মোড়াকরি সেচ প্রকল্পসহ এলাকার ৪টি সেচ প্রকল্প আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা পরিচালনা করে আসছেন। ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন হওয়ার পর মোড়াকরিসহ এলাকার ৪টি সেচ প্রকল্প বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) থেকে নতুন করে অনুমোদন আনার জন্য আবেদন করেন মোড়াকরি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক বিএনপি’র নেতা হাজী আহাম্মদ আলীর ছেলে ব্যবসায়ী শাহাব উদ্দিন। আবেদন করার পর প্রকল্প কিভাবে পাওয়া যাবে তা নিয়ে ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি এমদাদুল হকের সাথে কথা বলেন। তখন শাহাব উদ্দিনকে এমদাদুল হক বলেন- খরচ করলে আমি বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সাথে কথা বলে সেচ প্রকল্পটি এনে দিতে পারবো। এছাড়া বিএডিসির কর্মকর্তাদের উৎকোচ দিতে হবে। এমদাদুল হকের কথা শুনে প্রকল্প পাওয়ার জন্য শাহাব উদ্দিন এমদাদুল হককে দেড় লাখ টাকা দেন। কিন্তু টাকা দেওয়ার পরও তিনি সেচ প্রকল্পের ম্যানেজার নিশ্চিত হতে পারেননি। প্রকল্পের ম্যানেজার নিয়োগ পান আবারও আওয়ামীলীগ নেতা মোজাহিদ মিয়া। এদিকে শাহাব উদ্দিন ওই প্রকল্পের ম্যানেজার নিয়োগ না পাওয়ায় স্থানীয় কৃষকরাও হতাশ হন। পরবর্তীতে শাহাব উদ্দিন তার দেওয়া দেড় লাখ টাকা এমদাদুল হকের কাছে ফেরত চান। কিন্তু এমদাদুল হক টাকা ফেরত দেই-দিচ্ছি বলে সময় কর্তন করেন।
এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী শাহাব উদ্দিন জানান, ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পূর্বে মোড়াকরির সেচ প্রকল্পগুলো আমার মরহুম পিতা পরিচালনা করতেন। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর কর্তৃপক্ষ ম্যানেজার হিসেবে আওয়ামীলীগ নেতাদের ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে আসছেন। কিন্তু তারা এলাকার হাওরের জমিগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি দিতে পারেননি। সঠিক সময়ে জমিগুলোতে পানি না হওয়ায় কয়েক বছর ধরে ফলন হচ্ছে না। জমিতে ফলন না হওয়ায় কৃষকরা প্রতি বছরই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা আমাকে প্রকল্পের ম্যানেজার হওয়ার দাবি জানান। এ প্রেক্ষিতে আমি বিএডিসিতে আবেদন করি। পরবর্তীতে আমাকে প্রকল্পের ম্যানেজার নিয়োগ নিশ্চিত করার জন্য আমাদের ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এমদাদুল হক দেড় লাখ টাকা নেন। কিন্তু তিনি আমাকে সেচ প্রকল্পের ম্যানেজার নিয়োগ এনে দিতে পারেননি। আমার টাকা ফেরত চাইলে তিনি দেই দিচ্ছি বলে সময় কর্তন করেন। এ বিষয়টি বিএনপির সিনিয়র নেতাসহ এলাকার মুরুব্বীয়ানকে জানালেও তারা এমদাদুল হকের কাছ থেকে টাকা ফেরত আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমদাদুল হক আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে আঁতাত করে আমার দেড় লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। আমি আমার টাকা উদ্ধার করে দেওয়ার জন্য জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দসহ প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।