হবিগঞ্জ বাস টার্মিনাল জামে মসজিদে জুমার খুৎবায় মাওলানা আব্দুর রহমান সেলিম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ পৌর বাস টার্মিনাল জামে মসজিদে জুমার খুৎবায় মাওলানা আব্দুর রহমান সেলিম বলেছেন- পিতা মাতার প্রতি সন্তানের হকের বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয়ে থাকে। তবুও কেন সন্তানরা অবাধ্য হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ হল- সন্তানের প্রতি পিতা মাতা প্রকৃত হক আদায় করছেন না। বিয়ের পূর্ব থেকেই সন্তানের প্রতি পিতা মাতার হক সৃষ্টি হয়ে যায়। বিয়ের বয়স হলে- ছেলে মেয়ের জেনে নেয়া উচিত সে কাকে বিয়ে করতে যাচ্ছে। যাকে সে বিয়ে করছে সে নেককার পুরুষ-মহিলা কি না, কোরআন হাদিস সম্পর্কে ভাল জ্ঞান আছে কি না, আমলদার কি না। এসব বিষয়ে কোনো রকম খোঁজখবর না নিয়ে সুন্দর ও সম্পদের দিকে আমরা ঝুকছি। ফলে আমরা নেককার সন্তান পাচ্ছি না। সন্তানের জন্মের পর পিতার উচিত সন্তানের ডান কানে আজান ও বাম কানে ইকামত শুনিয়ে দেয়া। তা সঠিকভাবে করা হচ্ছে না। ফলে সন্তান শয়তানের ধোকায় পড়ছে। ৬/৭ বছর থেকেই নামাজের শিক্ষা দেয়া, ফজরের সময় ঘুম থেকে উঠানোর শিক্ষা দেয়া, আদব কায়দার শিক্ষা দেয়া, সালাম প্রচলনের শিক্ষা দেয়া দরকার। আমরা তা না করে সন্তানকে সকাল বেলায় ঘুমাতে উৎসাহ দিচ্ছি। অনেক ক্ষেত্রে মা বাবা ফজরের নামাজ এমনভাবে আদায় করছেন, যাতে সন্তানের ঘুমের ব্যাঘাত না ঘটে। এসব করে সন্তানকে প্রকৃতপক্ষে জাহান্নামের দিকেই ঠেলে দেয়া হচ্ছে। ১০ বছর হলেই ছেলে হউক মেয়ে হউক তার বিছানা আলাদা করে দিতে হবে। আমরা এরচেয়েও বেশি বয়সের ছেলে মেয়েকে আমাদের সাথেই ঘুমাতে দিচ্ছি, অনেক ক্ষেত্রে ছেলে মেয়েকে একত্রে ঘুমাতে দিচ্ছি, এসব ভালবাসার নিদর্শন নয়, শয়তানের নিদর্শন। ছেলে মেয়ে যখন বিয়ের উপযুক্ত হবে, দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের বিয়ে দিতে হবে। আমরা বয়স্ক বানিয়ে, প্রতিষ্ঠিত করার নামে সময় ক্ষেপন করে ছেলে মেয়েকে বিয়ে দিচ্ছি। বিয়ের বয়স হয়েছে, কিন্তু মা বাবা সন্তানের বিয়ে দিচ্ছেন না, এই সময়ের মধ্যে সন্তান যতটা পাপকাজে লিপ্ত হবে, সন্তানের পাশাপাশি পিতা মাতার আমলনামায় গুনাহের অংশ জমা হতে থাকবে। আমরা বিয়ের পূর্বে নেককার বেছে নিলাম না, সন্তান জন্মের পর কানে আজান ইকামত দিলাম না, ৬/৭ বছর থেকে নামাজ শিক্ষা দিলাম না, সালামের প্রচলন করলাম না, ১০ বছর থেকে বিছানা আলাদা করে দিলাম না, উপযুক্ত বয়সে সন্তানের বিয়ে দিলাম না, এসব সন্তানের কাছ থেকে মা বাবা ভাল কিছু আসা করতে পারেন না। সন্তান অবাধ্য হওয়ার জন্য সন্তান দায়ী না, পিতা মাতাই দায়ী। মাওলানা আব্দুর রহমান সেলিম বলেন- মেয়ে সন্তানকে গৃহে বন্দী করে রাখার নাম পর্দা নয়, সে ঘর থেকে বের হবে, লেখাপড়া করবে, ব্যবসা বাণিজ্য করবে, সংসার সামলাবে, সবকিছু সে করবে পর্দার মধ্য থেকে। এটাই ইসলাম।