আবুল কালাম আজাদ, চুনারুঘাট থেকে ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় ভিক্ষাবৃত্তি থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এলেন তিন নারী পুরুষ। উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে তাদেরকে পুনর্বাসনের জন্য ভ্যানসহ দোকান সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে উপজেলার দুই পুরুষ ও এক নারী ভিক্ষুক এখন আর ভিক্ষা করছেন না। তারা এখন ভ্রাম্যমান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তাদের দোকানে চা থেকে শুরু করে সবকিছুই পাওয়া যাচ্ছে।
সোমবার বিকেলে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক দেবী চন্দ এসব দোকান উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় ভিক্ষাবৃত্তি দূর করার জন্য চুনারুঘাট উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর তাদের এসব ক্ষুদ্র ব্যবসা দিয়েছে। যাদেরকে ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে দেওয়া হয়েছে তারা হলেন উপজেলার রানীগাও ইউনিয়নের পীরেরগাও গ্রামের রিপন মিয়া, দেওরগাছ ইউনিয়নের দেওরগাছ গ্রামের আমির হোসেন ও আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের ছয়শ্রী গ্রামের আব্দুল মালিকের স্ত্রী শাহনাজ বেগম। তারা তিন জনই দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বারিন্দ্র রায় জানান, দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা সমাজ থেকে ভিক্ষাবৃত্তি দূর করতে তাদের পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে ক্ষুদ্র ব্যবসা দিয়েছি। তাদের প্রত্যেককে একটি ভ্যানসহ অন্যান্য মালামাল ক্রয় করে দোকান সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা এখন আর ভিক্ষুক নয়, তারা এখন ভ্রাম্যমান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তাদের পুনর্বাসনে সমাজ সেবা কার্যালয় থেকে ১ লাখ সাড়ে ১২ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার সকল ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের আওতায় আনা হবে।
আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের সুবিধাপ্রাপ্ত নারী শাহনাজ বেগম বলেন, নিজের একটি ঘর ছাড়া আমার আর কোন জমি জমা নেই। এতদিন দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে তিন বাচ্চাকে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতাম। এখন থেকে এলাকার বাজারে এ ব্যবসা করেই ছেলেমেয়ে নিয়ে কোন রকম খেয়ে পড়ে থাকতে চাই। আমার ছেলেমেয়েদের এখন আর কেউ ভিক্ষুকের ছেলে মেয়ে বলবে না।
পীরেরগাও গ্রামের রিপন মিয়া বলেন, আমি আর ভিক্ষা করতে চাই না, আমার এ ক্ষুদ্র দোকান চালিয়ে বৃদ্ধ বাবা মাকে নিয়ে জীবন চালাতে চাই। ভিক্ষাবৃত্তি করে খেলে সমাজও ভাল চোখে দেখে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় আমরা উপজেলার সকল ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন করতে চাই। তাদের তালিকা করা হয়েছে। তিন জনকে দিয়ে শুরু করেছি।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com