আদালতে শ্যালিকাকে খুনের বর্ণনা দিয়েছে লম্পট সোহাগ
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে স্ত্রী প্রবাসে থাকার সুযোগে শ্যালিকার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে সোহাগ নামে এক লম্পট। শুধু তাই নয় স্ত্রীর বড় বোনের মেয়ের দিকেও কুদৃষ্টি পড়ে তার। এতে শ্যালিকা দুলাভাইকে শাসিয়ে দিলে লম্পট দুলাভাই শ্যালিকাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে গিয়ে অবশেষে ধরা পড়েছে। পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছে ওই দুলাভাই সোহাগ। ঘটনাটি ঘটেছে চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের শেখেরগাঁও গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শেখেরগাঁও গ্রামের আব্দুর ছাতিরের মেয়ে ছিতারাকে ১০ বছর পূর্বে বিয়ে করে হবিগঞ্জ পৌর এলাকার যশেরআব্দার সবুজ মিয়ার পুত্র সোহাগ। বিয়ের পর সোহাগ তার শ্বশুর বাড়িতেই বসবাস করছিল। শাওন নামে সোহাগের তিন বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। কিছুদিন পর সোহাগ তার স্ত্রী ছিতারাকে সৌদি আরব পাঠিয়ে দেয়। সোহাগের অবুঝ সন্তানের দেখাশোনা করতেন শ্যালিকা জুনেরা। এ সুবাদে শ্যালিকার সাথে সোহাগের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। জীবিকার তাগিদে জুনেরাও সৌদি আরব চলে যায়। প্রবাসে ৪ মাস অবস্থানের পর করোনার কারণে দেড় মাস পূর্বে জুনেরা দেশে চলে আসে। জুনেরার পরিবার জুনেরাকে বারবার বিয়ে দিতে চাইলে লম্পট দুলাভাই পাত্রদেরকে ভুল বুঝিয়ে ফিরিয়ে দিত। এরই মাঝে সোহাগ স্ত্রীর বড় বোনের মেয়ের দিকে কুদৃষ্টি দেয়। লম্পট দুলাভাইর কুমতলব বুঝতে পেরে শ্যালিকা জুনেরা দুলাভাইকে শাসিয়ে দেয়। এর জের ধরে গত মঙ্গলবার রাতে শ্যালিকার সাথে সোহাগের বাকবিত-া হয়। এক পর্যায়ে শ্যালিকা জুনেরা খাতুনের গলায় (১৯) ওড়না পেঁছিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয় দুলাভাই সোহাগ। হত্যার পর দুলাভাই নিজেই শ্যালিকার লাশ তড়িঘড়ি করে দাফন করার ব্যবস্থা করেন। বিষয়টি জুনেরার আত্মীয় স্বজনদের সন্দেহ হলে তারা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে মর্গে প্রেরণ করে।
গত বুধবার রাতে জামাতা সোহাগকে আসামী করে চুনারুঘাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন আব্দুর ছাতির মিয়া। মামলা দায়ের করার পর চুনারুঘাট থানার ওসি মো. আলী আশরাফের নির্দেশে ইন্সপেক্টর তদন্ত চম্পক দাম এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে শ্বশুরবাড়ি এলাকা থেকে ঘাতক দুলাভাই সোহাগ (৩০) কে আটক করেন। পরে সে পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করলে তাকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান উদ্দিন প্রধানের আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যার বর্ননা দেয় ঘাতক সোহাগ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চুনারুঘাট থানার ওসি মো. আলী আশরাফ জানান, নিহত জুনেরার পিতার মামলা দায়েরের পর আমরা আসামী গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছি এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ওড়না উদ্ধার করা হয়েছে। আসামী সোহাগ আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দী প্রদানের পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
হবিগঞ্জের কোর্ট ইন্সপেক্টর আল আমিন জানান, হত্যার দায় স্বীকার করে আসামী সোহাগ স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে।