এম,এ আহমদ আজাদ, নবীগঞ্জ থেকে ॥ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বিআরটিসি বাসের চাপায় দুটি সিএনজি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। বাসের নিচে চাপা পড়ে ৮ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি একটি পরিাবারের স্বপ্নের মৃত্যু হয়েছে। অসুস্থ মা-বাবাকে শেষ দেখা হলো না ছমিরুন ও তার শিশুকন্যা মারিয়ার। তাঁর সাথে মারা গেছে নববিবাহিত দেবরের স্ত্রী হালিমা বেগমও। ছমিরুন নিজের শিশুকন্যা ও দেবরের স্ত্রীকে নিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার মুড়াউড়া গ্রাম থেকে পানিউমদা বাবার বাড়ি যাচ্ছিলেন। ফুটফুটে শিশু মারিয়া বায়না ধরে নানার বাড়ি যাবে। শিশুকন্যার আশা পূরণ করতে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন ছমিরুন। এসব কথা বলে মুর্চা যাচ্ছিলেন মৃত হালিমার স্বামী অনু মিয়া। তিনি মৃত ছমিরুনের দেবর। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে হাজির হন অনু মিয়া। শত শত লোককে ডিঙ্গিয়ে তিনি সোজা গাড়ির নিচে চলে যান। তখন তাকে আইনশৃংখলা বাহিনীর লোকজন ধরে নিয়ে আসেন। চিৎকার করে কান্না করছিলেন তিনি। বলেন আমার স্ত্রী ও ভাতিজি মারিয়া বললো আসছি। মারিয়া বলে চাচ্চু আসছি। এর কিছুক্ষণ পরেই আসেন আবু তাহের। চিৎকার করে কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, সকাল থেকে শিশু মারিয়া নানা নানিকে দেখার জন্য বায়না ধরে। সেই বায়না মিঠাতেই তার স্ত্রী ছমিরুন নেছা বিকালে একটি সিএনজি অটোরিকশা রিজার্ভ করে বাবার বাড়ি রওয়ানা দিয়েছিলেন। যাবার সময় শিশু মারিয়া বাবাকে একটি আদর দিয়ে শেষ বিদায় নেয়। স্ত্রী ছমিরুন স্বামীকে বলে যান রান্না করে রেখেছি খেয়ে নিও। সেই রান্না করা ভাত খাবার আগেই তার কাছে খবর আসে সিএনজি একসিডেন্ট হয়েছে। তখনও জানতেন না তার মেয়ে ও ভাইয়ের স্ত্রী মারা গেছে। ঘটনাস্থলে এসে দেখেন স্ত্রী সন্তানের লাশ। তিনি বলেন স্ত্রীর শেষ রান্না খাওয়া হয়নি। আমার স্ত্রী ও সন্তান যে শেষ বিদায় নিয়েছে সেটাও আমি জানি না। আমার মেয়েরও নানা নানিকে দেখা হয়নি। তিনি জানান তার ভাই অনু দুই মাস আগে হালিমা বেগমকে বিয়ে করেছেন। তাদের সংসারে এখন চরম অন্ধকার। শিশু মারিয়ার জন্য বাপ-চাচার বিলাপে ঘটনাস্থলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com