প্রচারণায় রয়েছেন ৭ বারের নির্বাচিত বর্তমান কাউন্সিলর দীলিপ দাস
এসএম সুরুজ আলী ॥ দু’একদিনের মধ্যেই দেশের পৌরসভাগুলোর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা আর ঘরে বসে নেই। তারা প্রচারণার মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। দিনের বেলা গণসংযোগের পাশাপাশি রাতে নিজেদের সমর্থনে উঠান বৈঠক করছেন। বৈঠকে প্রার্থীরা নির্বাচনী পরিকল্পনা ধারণ করার পাশাপাশি এলাকার মুরুব্বীয়ান, যুবক ও তরুণদের সমর্থন আদায় করছেন। উঠান থেকে অনেকেই আবার বিগত দিনের নির্বাচনী অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে উত্তীর্ণ হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। দৈনিক হবিগঞ্জের মুখের পাঠক জন্য হবিগঞ্জ জেলার প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ হবিগঞ্জ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণার খবর পর্যায়ক্রমে তুলে ধরা হচ্ছে। আজ হবিগঞ্জ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণার খবর তুলে ধরা হলো।
হবিগঞ্জ পৌরসভার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড হলো ৩নং ওয়ার্ড। আনোয়ারপুর, নোয়াহাটি, বাতিরপুর, নাতিরপুর, গানিংপার্ক, ঘাটিয়া, পি.টি.আই ও শ্মশানঘাট এলাকা নিয়ে এ ওয়ার্ডটি গঠিত। এ ওয়ার্ডে ৫ হাজারের চেয়ে বেশি ভোটার রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরেই এ ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলর পদে দায়িত্ব পালন করছেন পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র দীলিপ দাস। এবারের নির্বাচনে তিনিসহ এ ওয়ার্ডে সম্ভাব্য ৮ প্রার্থী নির্বাচনকে করবেন বলে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর অধিকাংশ বয়সে নবীণ। তারা প্রতিদিন গণসংযোগের পাশাপাশি রাতে উঠান বৈঠক করছেন। গণসংযোগকালে ওয়ার্ডের বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে ধরছেন। ওই সমস্যাগুলো নির্বাচিত হলে সমাধান করবেন বলে ওয়ার্ডবাসী আশ্বস্ত করছেন। এবার এ ওয়ার্ডে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর দীলিপ দাস, ৩নং ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি ক্যাবল ব্যবসায়ী মো. আব্দুল আহাদ, হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগের সহ-সম্পাদক ও হবিগঞ্জ পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শান্তু দাশ অলক, মোশারফ হোসেন মঞ্জু, ছাত্রলীগ নেতা পান্না কুমার শীল অঙ্কন, সত্যজিৎ দাশ রনি, নূর মোহাম্মদ লিটন ও গোপাল দাস।
এ ব্যাপারে বর্তমান পৌর কাউন্সিলর দিলীপ দাস জানান, এ ওয়ার্ডের জনগণ আমাকে ৭ বার কাউন্সিলর নির্বাচিত করেছেন। এর মধ্যে পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করেছি। এ ওয়ার্ডের প্রায় ৯০% উন্নয়নমূলক কাজ আমি করেছি। এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এ নির্বাচনে ওয়ার্ডবাসী আমাকে তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন বলে আমি আশাবাদী।
কাউন্সিলর প্রার্থী মো. আব্দুল আহাদ জানান, বিগত নির্বাচনে এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে অংশ নিয়ে ৯শত ভোট পেয়ে ২য় স্থান দখল করি। এ নির্বাচনে দিলীপ কুমার দাসের মুল প্রতিদ্বন্দ্বিই আমি ছিলাম। তিনি বলেন- ইতিমধ্যে আমার গ্রাম আনোয়ারপুরের সর্বস্তরের লোকজন একক প্রার্থী হিসেবে আমাকে সমর্থন করেছেন। গ্রামবাসীর সমর্থন নিয়ে আমি নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছি। তিনি বলেন-এ ওয়ার্ডের প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। এই জলাবদ্ধতা নিরসনে পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা গ্রহনসহ আন্তরিকভাবে রাস্তাঘাট সংস্কার ও নির্মাণ কাজ করে যাবো। আমি আশাবাদী ওয়ার্ডবাসী এবার আমাকে নির্বাচিত করবেন।
কাউন্সিলর প্রার্থী জেলা যুবলীগ নেতা শান্তু দাস অলক দৈনিক হবিগঞ্জের মুখকে জানান, জনগণের সেবা করবো বলেই আমার কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে আসা। নির্বাচিত হলে আমার সম্মানী ভাতা দরিদ্র মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেবো। এলাকার সমস্যা চিহ্নিত করে ওয়ার্ডবাসীকে সাথে নিয়ে তা সমাধান করবো। প্রতি ৩ মাস অন্তর-অন্তর এলাকার ‘সমস্যা ও সম্ভাবনা’ নিয়ে পাড়ায়-পাড়ায় মতবিনিময় সভা করব। এছাড়াও ওয়ার্ডের ৩টি গুরুত্বপূণ পয়েন্টে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নির্ধারিত সময়ে ‘ওয়াই-ফাই’ এর মাধ্যমে দেয়া হবে ফ্রি-ইন্টারনেট সেবা। পাশাপাশি ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ন স্থানে ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্থাপন করবো ময়লা-আবর্জনার ডাস্টবিন। তিনি আরো জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে পরিকল্পিতভাবে ড্রেন সংষ্কার ও প্রয়োজনীয় স্থানে সড়কবাতি স্থাপন করবেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে।
কাউন্সিলর প্রার্থী সত্যজিৎ দাশ রনি জানান, এ ওয়ার্ডে পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। নির্বাচিত হলে পরিকল্পিত ড্রেনগুলো সংস্কার ও নির্মাণ করা হবে। একজন তরুণ প্রার্থী হিসেবে ওয়ার্ডবাসীর দোয়া আশির্বাদ কামনা করছি।
কাউন্সিলর প্রার্থী ছাত্রলীগ নেতা পান্না কুমার শীল অঙ্কন জানান, নির্বাচিত হলে ওয়ার্ডে যেসব বরাদ্দ আসবে তা সুষম বন্টন করা হবে। ওয়ার্ডবাসীকে সাথে নিয়ে রাস্তাঘাট নির্মাণসহ উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করবো। আশা করি একজন তরুণ প্রার্থী হিসেবে এ ওয়ার্ডের জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।
কাউন্সিলর প্রার্থী গানিংপার্ক এলাকার বাসিন্দা শিক্ষানবীশ আইনজীবী গোপাল দাস জানান, নির্বাচিত হলে পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসন করবো। ওয়ার্ডকে মাদকমুক্ত করে আদর্শ একটি ওয়ার্ড গড়ে তুলবো।
কাউন্সিলর প্রার্থী নুর মোহাম্মদ লিটন জানান, নির্বাচিত হলে ৩নং ওয়ার্ডে যতগুলো সমস্যা রয়েছে তা চিহ্নিত করে সমাধান করবেন। বিশেষ করে ওয়ার্ডকে মাদকমুক্ত রাখাসহ পরিকল্পিত উন্নয়ন করাই হবে আমার প্রথম কাজ।
সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী মোশারফ হোসেন মঞ্জু জানান, বিগত নির্বাচনে আমি অংশগ্রহন করেছি। এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহন করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেবো।