স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জে জাঁকজমকের সাথে পালিত হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব শ্যামা পূজা ও দীপাবলি উৎসব। হবিগঞ্জ শহর ও শায়েস্তাগঞ্জসহ জেলার সর্বত্র বিভিন্ন স্পটে, মন্দিরে ও বাসা-দোকানপাটে অনুষ্ঠিত হয়েছে শ্যামা পূজা ও দীপাবলি উৎসব। হিন্দু শাস্ত্রে মা কালীকে বিপদনাশিনী হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন অমঙ্গলের হাত থেকে মা কালী তাদের রক্ষা করে থাকেন। শনিবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন পূজা মন্দিরে শ্যামা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া দীপাবলি উৎসব উপলক্ষে বিভিন্ন বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান মনোরম আলোকসজ্জা করা হয়। তবে করোনা মহামারীর কারণে কোন মন্দিরে ভক্তদের ততটা উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। এদিকে দীপাবলি ও কালী পূজা উপলক্ষে বিভিন্ন মন্দির কমিটির উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও আরতী প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এদিকে দীপাবলি ও শ্যামা পূজা উপলক্ষে পৌর মহাশ্মশানে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
পূরাণ মতে, কালী দেবী দুর্গারই আরেকটি শক্তি। সংস্কৃত ভাষার ‘কাল’ শব্দ থেকে কালী নামের উৎপত্তি। কালীপূজা হচ্ছে শক্তির পূজা। জগতের সকল অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তির বিজয়। কালী দেবী তার ভক্তদের কাছে ‘শ্যামা’, ‘আদ্য মা’, ‘তারা মা’, ‘চামুন্ডি’, ‘ভদ্রকালী’, ‘দেবী মহামায়া’সহ বিভিন্ন নামে পরিচিত। কালীপূজার দিন হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা সন্ধ্যায় তাদের বাড়িতে ও শ্মশানে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে স্বর্গীয় পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের স্মরণ করেন। একে বলা হয় দীপাবলী।
দুর্গাপূজার মতো কালীপূজাতেও গৃহে বা ম-পে মৃন্ময়ী প্রতিমা নির্মাণ করে পূজা করা হয়। মন্দিরে বা গৃহে প্রতিষ্ঠিত প্রস্তরময়ী বা ধাতুপ্রতিমাতেও কালীপূজা করা হয়। মধ্যরাত্রে তান্ত্রিক পদ্ধতিতে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে গৃহস্থ বাড়িতে সাধারণত অতান্ত্রিক ব্রাহ্মণ্যমতে আদ্যাশক্তি কালীর রূপে কালীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
হিন্দু লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, কালী শ্মশানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। এই কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে শ্মশানে মহাধুমধামে শ্মশানকালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।