সম্পাদকসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহর থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার বিভিন্ন খবরে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহী’র ৫ কোটি টাকার মানহানি হয়েছে। এজন্য তিনি গতকাল বুধবার দুপুরে পত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রকাশক প্রকৌশলী সুশান্ত দাশ গুপ্তসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মানহানির মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ বিচারক শাহিনুর আক্তার মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। মামলায় অন্য যাদের বিবাদীভূক্ত করা হয়েছে তারা হলেন- মাধবপুরের ধর্মঘর ইউনিয়নের মালঞ্চপুর গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে নুর আলম ওরফে শাহীন, তার ভাই মাহতাবুর আলম জাপ্পি, পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক নুরুজ্জামান মানিক, বার্তা সম্পাদক রায়হান উদ্দিন সুমন, স্টাফ রিপোর্টার তারেক হাবিব, সোনালী প্রিন্টিংস ও মুদ্রাকর এর পরিচালক শোয়েব চৌধুরী, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লুকড়া ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামের শাহজাহান মিয়ার স্ত্রী নাজিরা বেগম ও তার স্বামী শাহজাহান মিয়া।
মামলার এজাহারে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহী উল্লেখ করেন, বিবাদীরা আমার হবিগঞ্জ পত্রিকায় বিভিন্ন সময় মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ করে এবং তা ফেসবুকের মাধ্যম প্রচার করে সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সম্মানহানি করে আসছেন। তারা মানহানি এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলারও আসামী। মামলার ১ ও ৭নং বিবাদী পরস্পর যোগসাজসে বিভিন্ন সময় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার করে আমার সম্মানহানি করে। মামলার ৮ ও ৯নং আসামী জাল দলিল সৃষ্টি করিয়ে সংবাদপত্রে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে আমার সম্মানহানি করে। গত ২৪ জুলাই দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকায় সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রনোদিত ও মিথ্যাভাবে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি-সেক্রেটারীর কান্ড মাধবপুর ছাত্রলীগের সেক্রেটারী পদ দিতে ২০ লাখ টাকা লেনদেন শীর্ষক সংবাদ প্রকাশ করে। যাহা আদৌ সত্য নয়। ২দিন পর অর্থাৎ ২৬ জুলাই আবারও দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকায় “পদ দেয়ার প্রলোভন হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি-সেক্রেটারীর আর্থিক কেলেংকারী ফাঁসের পর আরেক কান্ড, মাধবপুর উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা মাহতাবুর আলম জাপ্পিকে পুলিশ পরিচয়ে হুমকি” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে। যাহা আদৌ সত্য নয়। পরবর্তীতে ২৮ জুলাই দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকায় তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ঃ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা, হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহীর বিরুদ্ধে এবার জমি দখলের অভিযোগ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে। এছাড়া গত ৭ আগস্ট একই বিষয়ে দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ বরাবরে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি, জেলা ছাত্রলীগের সদ্য স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহী’র বিরুদ্ধে জায়গা দখলের ঘটনায় তোলপাড়” বাস্তবে সংবাদে উল্লেখিত জমির বায়নাসূত্রে মালিক আমার ভাই এরশাদ মিয়া।
এ ব্যাপারে আদালতে কবলা পাওয়ার জন্য মামলা চলমান রয়েছে। এই মামলার ৮নং আসামী মোছাঃ নাজিরা বেগম আদালতে পক্ষভূক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করলে বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা ১ম আদালত তার আবেদন খারিজ করেন। বিজ্ঞ বিচারক আদেশে নাজিরা বেগমের দলিলকে ভূয়া বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু ৮ ও ৯নং আসামী উক্ত মিথ্যা সংবাদে ভুল তথ্য পরিবেশন করে আমার সম্মানহানি করে। গত ১০ আগস্ট দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকায় মূর্তিমান আতংক হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সাইদুর-মাহি, জাপ্পির ২০ লাখ টাকার পর এবার রুপমের কাছ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা হাতানোর তথ্য ফাঁস, প্রহসনের বিচার আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা জাপ্পির ভাইয়ের” বাস্তবে এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। স্বয়ং রুপম হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ ধরণের ঘটনা অস্বীকার করেছেন। অস্বীকার করার পরও গত ১৪ আগস্ট দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকায় হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির আরেক নাটক, পদ দেয়ার প্রলোভনে অর্থ হাতানোর পর অপকর্ম ডাকতে রুপমকে দিয়ে জোরপূর্বক সংবাদ সম্মেলন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে। যাহা আদৌ সত্য নয়। গত ২৩ আগস্ট দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকায় “দিনভর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাস্যরস, গরু চুরি মামলার চার্জশীটভূক্ত আসামী জেলা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহী’ বাস্তবে আমি কোন গরু চুরির ঘটনায় জড়িত ছিলাম না এবং উল্লেখিত মামলার এজাহার এবং এফআইআর এও আমার কোন নাম ছিল না। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে চার্জশীটে আমার নাম সংযুক্ত করে দেয়। যেহেতু, আমি ঘটনাতে সংযুক্ত ছিলাম না তাই বিজ্ঞ আদালত উক্ত মামলার রায় প্রদানকালে আমাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। কিন্তু জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে। গত ২৬ আগস্ট দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে “হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহী’র সহযোগী ইয়াবা মামুনের অডিও ফাঁস শিরোনামে একটি স্ট্যাটাস প্রদান করে। বাস্তবে মামুন একজন রাজনৈতিক কর্মী হলেও আমার ব্যক্তিগত সহযোগী নয়।
মাহী তার এজাহারে আরো উল্লেখ করেন আসামীরা একের পর এক মিথ্যা এবং উদ্দেশ্য প্রনোদিত সংবাদ এবং ফেসবুকে প্রচারের ফলে আমার পারিবারিক, সামাজিক ও পেশাগতভাবে প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষতিসাধন করেছে। আসামীগণ ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে সামাজিক পারিবারিক ও পেশাগত মানহানি করার জন্য উক্ত মিথ্যা সংবাদ ও স্ট্যাটাস প্রকাশ করেছে। প্রত্যেকটি সংবাদ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রনোদিত, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিটি সংবাদে বাদীর সামাজিক ও পারিবারিক সম্মানহানি করা হয়েছে বলে আদালতে বিচার প্রার্থী হন মহিবুর রহমান মাহী।