
বানিয়াচং উত্তর-পূর্ব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও সচিব না থাকায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচং উপজেলা সদরের ১নং উত্তর-পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিব না থাকায় সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ইউনিয়নবাসী। প্রতিদিনই জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যু সনদ, ভাতার আবেদন বা জমিজমা-সংক্রান্ত কাজে নাগরিকরা ইউনিয়নে এসে প্রশাসক ও সচিব না থাকায় ফিরে যাচ্ছেন।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্র জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানে বানিয়াচংয়ের ৯ ছাত্র-জনতা নিহত হন। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান খানকে আসামী করা হয়। এরপর থেকে গা ঢাকা দেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান খান। ফলে ইউনিয়নের নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন ইউনিয়নবাসী। নিয়ম অনুযায়ী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর পরই চেয়ারম্যান নির্বাচিত মেম্বারদের মাঝে ৩ জনকে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। কোন কারণে চেয়ারম্যান অনুপস্থিত থাকলে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। প্যানেল চেয়ারম্যান-১ উপস্থিত না থাকলে চেয়ারম্যান-২ অথবা চেয়ারম্যান-৩ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান খান একক ক্ষমতা খাটানোর জন্য ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেননি। এ অবস্থায় ইউনিয়নবাসী নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসন সাধারণ নাগরিকরা যাতে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য বানিয়াচং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)-কে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে তিনিও সপ্তাহে দুই দিন অফিসে উপস্থিত হয়েছেন। ফলে ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ তাদের নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এদিকে ইউনিয়নের উন্নয়ন তহবিলের টাকা আত্মসাতসহ নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে গত ১২ সেপ্টেম্বর ইউনিয়নের সচিব এইচএএম তৌফিক ইমামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্ত হওয়ার পর তিনি ভারপ্রাপ্ত সচিবের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি। এ কারণে জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যু সনদ, ভাতার আবেদন বা জমিজমা-সংক্রান্ত কাজে নাগরিকরা ইউনিয়ন পরিষদে এসে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ইউনিয়ন উন্নয়ন কর্মকান্ডে ব্যাঘাত ঘটছে। চেয়ারম্যান না থাকায় এবং প্রশাসক ও সচিবের অনুপস্থিতিতে গ্রাম আদালত ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। সালিস বন্ধ হয়ে গেছে এবং সমাজে অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত একজন প্যানেল চেয়ারম্যান এর পাশাপাশি সচিব নিয়োগের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বানিয়াচং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ইউনিয়নের প্রশাসক ইসমাইল রহমান জানান, খুব দ্রুত জন্ম নিবন্ধনসহ সকল সমস্যা সমাধান করা হবে।