স্টাফ রিপোটার, মাধবপুর থেকে ॥ হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দকৃত বীর নিবাস সচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে। বাছাই কমিটির সদস্যদের ম্যানেজ করে ৫৫টি বীর নিবাসের মধ্যে ৩৯টি ‘বীরনিবাস’ (সরকার প্রদত্ত বসতঘর) দখলে নিয়েছে সচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এর মধ্যে অনেকেরই গাজীপুরসহ বিভিন্ন শহরে বাড়ি-গাড়ি রয়েছে। রয়েছে ৫ তলা বিল্ডিংসহ মার্কেট। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাহিদ বিন কাশেম কর্র্তৃক প্রেরিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাস্তবায়নাধীন অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ (১ম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের আবাসন সমূহ যাচাই-বাছাই সংক্রান্ত গঠিত কমিটির প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং ৪৮.০০.০০০০.০০৮.১৪.২৯৮(০৪).২৩-৮৫০ এর আলোকে গঠিত যাচাই-বাছাই কমিটি প্রেরিত প্রতিবেদনে দেখা যায়- মাধবপুর উপজেলার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাস্তবায়ধীন অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্প ১ এবং ২ এর মাধ্যমে ৫৯টি বীর নিবাস বরাদ্দ আসে। এর মধ্যে ৪ জনের জমি জটিলতা থাকায় বীর নিবাস নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। বাকী ৫৫টির মধ্যে তৎকালিন বাছাই কমিটির সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার এনাম খাঁসহ আওয়ামীলীগ দলীয় পরিচয়, অনিয়ম ও অর্থনৈতিক দুর্নীতির মাধ্যমে ৩৯টি বীর নিবাস সচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা দখলে নেন। বাকী ১৬টি বীর নিবাস অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের দেয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে বর্তমান যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আলাউদ্দিন জানান- বীর নিবাস দেয়ার ক্ষেত্রে অনিয়ম ও টাকা পয়সা লেনদেন হয়েছে। অনেক অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা বীরনিবাস পাননি। যারা পেয়েছেন তাদের অধিকাংশই সচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা। ওই সময় আমাদের কথার কোন মূল্য দেয়া হয়নি। কয়েকজনের হাতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জিম্মি ছিল।
বর্তমান যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মিয়াব আলী জানান- অনেক অসহায় মুক্তিযোদ্ধা আছে যাদের বাড়িঘর কিছুই নাই। কষ্ট করে জীবন-যাপন করেন। তাদের ঘর না দিয়ে সচ্ছলদের ঘর দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাহিদ বিন কাশেম জানান- আমরা তদন্ত করে যা পেয়েছি তা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। পরবর্তীতে উপর থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে তা বাস্তবায়ন করা হবে।