সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার ৯টি উপজেলার ৩৮২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০১টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাউশি পরিদর্শন ও নীরিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা বোর্ড জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, আঞ্চলিক পরিচালক, উপ-পরিচালক, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর বিষয়টি জানানো হয়েছে।
শিক্ষক কামাল হোসেন অভিযোগ করেন- আওয়ামী সরকারের আমলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ক্যাডারে পদায়নকৃত কর্তা ব্যক্তিরা দেখেও না দেখার ভান করছেন। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার পায়তারা চলছে, এমনকি প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রশাসনের ক্যাডাররা ঘুষ ও নিয়োগ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবরে আবেদন করা স্বত্বেও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টা মহোদয়গণের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি।
অভিযোগে কামাল হোসেন বলেন- ফ্যাসিবাদ স্বৈরাচারী সরকারের কর্তাব্যক্তিরা প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঘোমটা মেরে বসে আছেন। শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাঁচাতে হলে সুশীল নাগরিক রাজনৈতিক বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীদের এগিয়ে আসতে হবে। ম্যানেজিং কমিটি/গভনিং বডি নামক প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কর্তাব্যক্তিরা নিয়োগ বানিজ্যসহ শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে আদায়কৃত অর্থ কতিপয় কুচক্রী মহলের শিক্ষক-কর্মচারীদের সহযোগিতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোটি কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে। হবিগঞ্জ জেলার জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রুহুল্লাহ্ বাংলা শিক্ষা পরিবার ও হবিগঞ্জ অনলাইন স্কুল নামে ফেইজবুক আইডি খুলে ২০১৮ সালে নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্তি বাবদ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করলে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান ২৫ অক্টোবর ২০২০ ও ২৮ অক্টোবর ২০২০ সালে ১ থেকে ৪৯ পাতার দুটি প্রতিবেদন মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবরে প্রেরণ করেন এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র সচিব সদয় অবগতির জন্য তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। কিন্তু আদৌ তা কার্যকর হয়নি। জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রুহুল্লাহ টাকা বিহীন কোন এমপিও ভুক্তির কোন ফাইল অগ্রায়ন করেননি। এমনকি তিনি ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়নে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ নিতেন।
অবৈধ বেআইনীভাবে নিয়োগ প্রাপ্তরা এমপিও ভুক্তির আবেদন করলে সিন্ডিকেট সদস্যদের মাধ্যমে ঘুষের বিনিময়ে ফাইল অগ্রায়ন করতেন।
হবিগঞ্জ জেলার ১০১টি দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান সমূহ পরিদর্শন করার জন্য পরিচালক পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর বরাবর আবেদন করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। যেসব প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করা হয়েছে সেগুলোর অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা স্ট্যাপিং পাঠক বঞ্চিত ও বিষয় ভিত্তিক নিয়োগ অনিয়ম অডিট রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে। এমতাবস্থায় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করা হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানে এমপিও স্থগিত করা সহ বাড়ৈই সিন্ডিকেট সদস্যদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় সহ বিভিন্ন দপ্তর থেকে প্রত্যাহার করার জন্য অভিভাবকরা দাবি জানাচ্ছেন।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com