পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচং উপজেলার সুজাতপুর ইউনিয়নের ইকরাম গ্রামে শ্রী শ্রী জগন্নাথ জিউর আখড়ার জায়গায় আবারও দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে একটি চক্র। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা করছেন এলাকাবাসী। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও আখড়ার জায়গা উদ্ধারের জন্য আখড়া কমিটির সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্র সরকার বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। গত মঙ্গলবার এ অভিযোগটি দায়ের করা হয়।
লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ইকরাম শ্রী শ্রী জগন্নাথ জিউর আখড়া কমিটির সভাপতির গোপাল সরকার ও ক্ষির মোহন সরকার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময়ে তারা দু’জন উন্নয়নের নামে আখড়ার লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছেন। এছাড়াও তারা মোটা অংকের টাকা উৎকোচ নিয়ে ইউনিয়নের সাবেক এক চেয়ারম্যানের কাছে আখড়ার কোটি টাকা মূল্যের ৮ কেদার জায়গায় প্রতিষ্ঠিত পুকুর লিজ দেন। অভিযোগ রয়েছে লিজ গ্রহীতা ওই সাবেক চেয়ারম্যান পুকুরটি নিজের দখলে নিয়ে নেন। পরবর্তীতে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ এ বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে অবগত করেন। এ প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৭ জুন তৎকালীন বানিয়াচং (সার্কেল) এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ সেলিম আখড়ায় গিয়ে পূজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় চেয়ারম্যান, মুরুব্বীয়ান ও সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে আখড়ার জায়গা দখলমুক্ত করেন। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আখড়া সংস্কার কাজের উদ্বোধন করেন হবিগঞ্জের তৎকালীন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা। এ সময় জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। এরপর থেকে আখড়ার কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনা হয়ে আসছে। এর মধ্যে ২০২৩ সালের ৩ মার্চ পূজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ, ইকরামসহ আশপাশের গ্রামবাসী ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সম্মেলনের মাধ্যমে আখড়া পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। এতে সভাপতি অশোক চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক রবিন্দ্র সরকার ও সাংগঠনিক সম্পাদক সুবোধ সরকার মনোনীত হন। ওই কমিটিতে শংকর পাল, শঙ্খ শুভ্র রায় ও ইউপি চেয়ারম্যান সাদিকুর রহমান সাদিক, বিপ্লব রায় সুজনকে উপদেষ্ঠা হিসেবে মনোনীত করা হয়। বর্তমান কমিটির নেতৃত্বে আখড়া সুন্দর ও শৃঙ্খলভাবে পরিচালনা হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি আবারও ক্ষির মোহন সরকার ও গোপাল সরকার গং অগঠনতান্ত্রিকভাবে আরেকটি আখড়া পরিচালনা কমিটি গঠন করেন। তারা আবারও আখড়ার জায়গা দখলের চেষ্টা করছেন এবং জোরপূর্বক আখড়ার গাছ কেটে নেয়। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা করছেন এলাকাবাসী। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন আখড়া কমিটির সাধারণ সম্পাদক রবিন্দ্র সরকার।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com