হিন্দু জমিদার ব্রাহ্মণ বিজয় কৃষ্ণ মহারতœ’র দান করা জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয় হবিগঞ্জ কালীবাড়ি
মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে নদীর তীরকে কেন্দ্র করেই অনেক প্রাচীন সভ্যতা গড়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় নদীর তীরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে হবিগঞ্জ শহর। এমন জনশ্রুতি রয়েছে হবিগঞ্জের মানুষের মুখে মুখে। অনেকে আবার বলে থাকেন হবিব উল্লাহ চৌধুরী নদীর তীরকে কেন্দ্র করে একটি গঞ্জ বা বাজার প্রতিষ্ঠা করেন। কালক্রমে এই বাজারটিই চৌধুরী বাজার নামকরণ করা হয়। কেউ কেউ হবিব উল্লাহ চৌধুরীকে লস্করপুরের বাসিন্দা আবার কেউ তাকে লস্করপুর আউলিয়া মিয়া পীর এর বাড়ির বাসিন্দা বলে দাবি করে থাকেন। নদীর তীরকে কেন্দ্র করে বাজার (বর্তমান চৌধুরী বাজার) প্রতিষ্ঠা করায় এটি খুব অল্প সময়ে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এ বাজার ছিল একটি সমৃদ্ধ বাজার। আশ পাশ এলাকা বা অঞ্চলের লোকজন ব্যবসা বাণিজ্যের কাজে এ বাজারে আসতেন। বিশিষ্ট লোকজনের বাসও ছিল হবিগঞ্জে। ব্রিটিশ সরকার যখন সাব ডিবিশন করে তখন হবিগঞ্জকে বেছে নেয়। এভাবেই সৃষ্টি হয় হবিগঞ্জের। তৎকালীন সময়ে লস্করপুর ছিল অত্রাঞ্চলের প্রশাসনের কেন্দ্র। পরে তা হবিগঞ্জ শহরে স্থানান্তর করা হয়। এটি ছিল তরপ রাজ্য। আচক নারায়ন ছিলেন এ রাজ্যের শেষ রাজা। জনশ্রুতি রয়েছে ব্রিটিশ আমলে তিনি এ অঞ্চল জয় করার পর লস্করপুর সৈয়দ বাড়ি ছিল এ অঞ্চলের শাসনকেন্দ্র। আচক নারায়ন ছিলেন চুনারুঘাটের অধিবাসী। এখনো সেখানে বিশাল দীঘি ও রাজবাড়ি রয়েছে। আচক নারায়ন ত্রিপুরার সামন্ত রাজা ছিলেন। তৎকালীন সময়ে লস্করপুর ছিল কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি। সেখানে আচক নারায়ন কর্তৃক স্থাপিত দেবতা ছিল এবং সবাই সেখানেই পূজা করতেন। আচক নারায়ন তরপ রাজ্য জয় করে ক্ষমতা গ্রহণের পর লস্করপুর রাজ বাড়ির লোকজন কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি লস্করপুর রেখেছিলেন। পরে তা হবিগঞ্জ নিয়ে আসার তোড় জোর শুরু হয়। বানিয়াচংয়ের হিন্দু জমিদার ব্রাহ্মণ বিজয় কৃষ্ণ মহারতœ কালীবাড়ির জন্য জায়গা দান করেন। আর সেই জায়গায় প্রতিষ্ঠা করা হয় হবিগঞ্জ কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি যা আজও বিদ্যমান। হবিগঞ্জ সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বৃন্দাবন সরকারি কলেজের ছাত্র ও শিক্ষক এবং শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর নিখিল ভট্টাচার্য্য এসব তথ্য প্রদান করেন।