প্রবাসী দুই ভাইয়ের স্ত্রীদের নিয়ে অপপ্রচারের জেরে খুন হন মোস্তাকিন
এম এ আহমদ আজাদ, নবীগঞ্জ থেকে ॥ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের পুরানগাঁও গ্রামের কিশোর মোস্তাকিন হত্যাকা-ের ১১ দিনের মধ্যে হত্যা মামলার প্রধান আসামী রায়হান উদ্দিন (২২) কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৯। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় র্যাব-৯ এর সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মশিহুর রহমান সোহেল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। গ্রেফতারকৃত রায়হান উদ্দিন (২২) কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের পুরানগাঁও গ্রামের আব্দুল খালিকের ছেলে।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়- বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৯ সিলেট ও শায়েস্তাগঞ্জস্থ হবিগঞ্জ ক্যাম্পের যৌথ অভিযানিক দল সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়-
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের পুরানগাঁও গ্রামের মৃত জফর মিয়ার ৫ ছেলে। প্রায় ৬ বছর আগে জফর মিয়া মৃত্যুবরণ করেন। মৃত জফর মিয়ার চতুর্থ ছেলে মোস্তাকিম মিয়া (১৭) বাড়িতে থেকে রাজমিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে কাজ করতো। বড় দুই ছেলের স্ত্রী রোজিনা বেগম (২৮) ও তাসলিমা আক্তার (২০) সহ মামলার বাদী ফুলবানু বেগম চার বেডরুমের বসতঘরে বসবাস করে আসছেন। বাদী ফুলবানু বেগমের ৩য় ছেলে সজল মিয়া ও আসামী রায়হান উদ্দিন একত্রিতভাবে মোস্তাকিনদের বাড়িতে ওয়াইফাই ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করে। পরে এ নিয়ে সজল মিয়ার সঙ্গে রায়হান উদ্দিনের বিরোধ দেখা দিলে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসার মাধ্যমে ওয়াইফাই সংযোগের সময় রায়হান উদ্দিনের দেয়া ৫০০ টাকা ফেরত দেওয়া হয় এবং তাকে মোস্তাকিনদের বাড়িতে আসতে নিষেধ করা হয়। কিছুদিন পরে রাত অনুমান ২টার দিকে রায়হান নিহত মোস্তাকিনদের বসতঘরে প্রবেশ করলে মোস্তাকিনের মা ফুলবানু বেগম চিৎকার করেন। পরে সজলুর স্ত্রী তাসলিমা আক্তার দৌঁড়ে আসে। এসময় স্থানীয় শফিক মিয়া, ধন মিয়া ও জাকির হোসেনসহ অন্যান্য লোকজন রায়হানকে আটক করেন। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আমিনসহ আরোও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ রায়হানের ব্যাপারে বিচার সালিশ করার কথা বলে নিয়ে যান। এ ঘটনার পর আসামী রায়হান মোস্তাকিনের প্রবাসী দুই ভাইয়ের স্ত্রীদের নিয়ে নানা ধরণের অপবাদ রটায়। পরে এনিয়ে শালিস-বৈঠক বসলে রায়হানকে মোস্তাকিনদের বাড়িতে যেতে নিষেধ দেয়া হয়। এনিয়ে রায়হান মোস্তাকিনের পরিবারের উপর ক্ষিপ্ত হয়। পরে মোস্তাকিনদের পরিবারের ক্ষতি করবে বলে রায়হান হুমকি দেয় ও এলাকায় প্রচার করে। এ ঘটনার পর আসামী রায়হানের চাচা ফজল মিয়াসহ তাদের পরিবারের লোকজনদের বিষয়টি অবগত করে মোস্তাকিনের পরিবার। রায়হানের পরিবার বিষয়টি দেখবে দেখবে বলে কালক্ষেপণ করে। এ ঘটনার জের ধরে ও তার দেয়া হুমকি বাস্তবায়ন করতে রায়হান উদ্দিনসহ অন্যান্য আসামীরা মোস্তাকিনকে গলা কেটে হত্যা করে।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com