হবিগঞ্জ শহরে ব্যবসার জন্য ঢাকাইয়া পট্টি ছিল বেশ প্রসিদ্ধ
রমেশ চন্দ্র দাশ নামে একজন মুক্তার ৫ পয়সা দিয়ে নিয়মিত রিকশায় কোর্টে যেতেন
মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ ১৯৫১ সালে হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করা বীর মুক্তিযোদ্ধা রোটারিয়ান ইঞ্জিনিয়ার ফণি ভূষণ দাস হবিগঞ্জ শহর সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আরো বলেন- ওই সময়ে রমেশ চন্দ্র দাশ নামে একজন মুক্তার ছিলেন। তিনি ৫ পয়সায় রিকশায় চলাচল শুরু করেন। তার বেশ নাম সুনাম ছিল। তিনি বর্তমান মোদক ফার্মেসীর সামন থেকে রিকশায় করে কোর্টে যেতেন। এক সময়ে এসে রিকশা ভাড়া বেড়ে ১০ পয়সায় দাঁড়ায়। তখনও তিনি রিকশায় চড়েই কোর্টে যেতেন। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, তৎকালীন সময়ে সবাই রিকশায় চড়তেন না।
মাছ তরিতরকারির জন্য শহরের চৌধুরী বাজার ছিল উল্লেখযোগ্য। বর্তমান নতুন খোয়াই মুখ কুশিয়ার হাটা হিসেবে বেশ পরিচিত ছিল। এখানে প্রচুর কুশিয়াইর (আখ) বিক্রি হতো। তাছাড়া ওই রাস্তার পাশে কাঠের বাক্স ফেলে নাপিত (নরসুন্দর) বসতো। বাক্সর উপর বসিয়ে চুল কাটা, সেভ করার কাজ করতো নাপিত। শুক্রবার এবং মঙ্গলবার ছিল হাট বার। এই দুই দিন এ বাজার থাকতো বেশ জমজমাট। এখনো এই ধারা অব্যাহত রয়েছে।
ব্যবসার জন্য শহরের ঢাকাইয়া পট্টি (কালীবাড়ি এলাকা থেকে হাজী সোনাহর আলীর ঘর পর্যন্ত) বেশ প্রসিদ্ধ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই এলাকার একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ছিলেন আলম শেঠ। তিনি ছিলেন এম,কম পাশ। তার পিতা ঢাকা থেকে হবিগঞ্জ শহরে এসে বসবাস শুরু করেন। তিনি দপ্তরীর কাজ করতেন। পরে আলম শেঠ শুরু করেন কাপড়ের ব্যবসা। পরে তিনি একে একে বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িত হন এবং এক সময় শহরের আলোচিত ধনী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ওই সময়ে ভারত থেকে মাল (পণ্য) আনতে হতো। পরে ওই মাল হবিগঞ্জ থেকে অন্যান্য স্থানে প্রেরণ করতেন তিনি। আলম শেঠ কখনো চেয়ারে বসে ব্যবসা করেননি। কাঠের টুলে বসে তিনি ব্যবসা পরিচালনা করতেন। শহরের স্বনামধন্য লোকজনের সাথে তার সুসম্পর্ক ছিল। প্রতিদিন বিকেলে তিনি তাদের সাথে আড্ডা দিতেন।