স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাহুবলের চক হাবিজপুর (বাবনাকান্দি) গ্রামে ওয়াহিদ মিয়া হত্যা মামলাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের পুরুষ শূন্য বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ধান, চাল, গরু বাছুর, স্বর্ণলংকারসহ প্রায় কোটি টাকার মালামাল। গতকাল শনিবার আসামী পক্ষের এক বাড়ী থেকে ফার্নিচার নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় জনতা আটক করে। পরে বাহুবল থানা পুলিশকে খবর দেয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফার্নিচারগুলো উদ্ধার করে।
পুলিশ সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে জায়গা নিয়ে বিরোধের জের ধরে চক হাবিজপুর প্রকাশ বাবনাকান্দি গ্রামের আরজু মিয়া গংদের সাথে ছানু মিয়া ও আব্দুল হাই গংদের বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধের জের ধরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় উভয় পক্ষের লোকজনের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ওয়াহিদ মিয়া নামে এক জনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পর থেকে প্রতিপক্ষের পুরুষ শূন্য বাড়িতে লুটপাট শুরু হয়। এদিকে ওয়াহিদ মিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় আব্দুল হাই বাদী হয়ে বাহুবল থানায় ৬০ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট আরো বেড়ে যায়। বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের হাত থেকে রক্ষার জন্য হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আরজু মিয়ার স্ত্রী মালেকা খাতুন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় উস্তার মিয়া, মোশাহিদ মিয়াসহ ২৯ জনকে আসামী করা হয়। লুটপাটের মামলা দায়ের করা হলেও ছানু মিয়া ও আব্দুল হাই’র পক্ষের লোকজন ক্ষ্যান্ত হয়নি। প্রতিদিন দিনে ও রাতে অব্যাহত ভাবে আরজু মিয়া গংদের বাড়ি থেকে জিনিসপত্র লুট করা হচ্ছে। গতকাল শনিবার সকালে আরজু মিয়ার পক্ষের নোয়াব উল্ল্যার বাড়ি থেকে ফার্নিচার ও মালামাল লুট করে নিয়ে যাওয়ার পথে বড়ইউড়ি গ্রামের লোকজন আটক করেন। এ সময় ফার্নিচার ও মালামালগুলো আব্দুল হাই গং জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এতে বড়ইউড়ি গ্রামবাসী বাঁধা দেন। পরে তারা বিষয়টি বাহুবল থানা পুলিশকে অবগত করলে এসআই মঞ্জুরুল আলমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফার্নিচারগুলো উদ্ধার করেন। কিন্তু অন্যান্য মালামাল আব্দুল হাই গং নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে আরজু মিয়া জানান, সংঘর্ষের দিন দুপুরে ওয়াহিদ মিয়ার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর পরই আমাদের বাড়িঘরে ভাংচুর ও লুটপাট শুরু হয়। এখন পর্যন্ত গরু, ছাগল, হাঁস, মোরগ, ধান, চাল, স্বর্ণলংকারসহ কোটি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ব্যাপারে আমরা মামলা দায়ের করেও রক্ষা পাচ্ছি না। তিনি মামলার আসামীদের গ্রেফতার ও মালামাল উদ্ধারের দাবি জানান।
বাহুবল থানার ওসি জানান, ঘটনার পর থেকে প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে লুটপাট ও ভাংচুর করার অভিযোগ আমরা পেয়েছি। আমরা যখন লুন্ঠনকারীদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করি এর আগেই তারা পালিয়ে যায়। গতকাল ২টি ফার্নিচার উদ্ধার করেছি। এ বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।