হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সাথে মতবিনিময়ে জি কে গউছ
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) ও টানা ৩ বারের নির্বাচিত হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ বলেছেন- আমি ভালো কাজ করে মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকতে চাই। যদি মহান আল্লাহ আমাকে জনগণের সেবা করার সুযোগ দেন তাহলে অন্য যা পারেনি আমি তা করে প্রমাণ করবো। নিজে অন্যায় করবো না, অন্যকে অন্যায় করতে দিব না। কোনো দুষ্ট লোকের সাথে বিএনপির সম্পর্ক নেই। তাই আসুন দেশকে ভালোবাসি, দেশের মানুষকে ভালোবাসি, সকলে মিলে এক সাথে মাথা উঁচু করে পরিচয় দেই আমরা সবাই বাংলাদেশি।
তিনি শুক্রবার বিকালে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে লাখাই উপজেলা বিএনপির মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
জি কে গউছ বলেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্দেশ দিয়েছিলেন কোনো মন্দির, ভিন্ন ধর্মের কোনো উপাসনালয়ে যদি একটি ঢিল পড়ে তাহলে ওই এলাকায় বিএনপির কোনো নেতার পদ থাকবে না। এই নির্দেশনা পেয়ে সকল ধর্মের উপাসনালয় এবং মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় আমরা দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছি।
তিনি বলেন- আমার পূর্বে হবিগঞ্জ পৌরসভায় অনেকেই দায়িত্ব পালন করেছেন কিন্তু শারদীয় দুর্গাপূজায় প্রতীমা বিসর্জনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। আমি হবিগঞ্জ পৌরসভায় মেয়রের দায়িত্ব নিয়েই খোয়াই নদীর চৌধুরী বাজার ও মাছুলিয়া এলাকায় দুটি ঘাটলা নির্মাণ করে দিয়েছি। আমি পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রতিটি পূজা মন্ডপে অনুদানের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। হবিগঞ্জ পৌর এলাকায় একটি মাত্র শশ্মান রয়েছে, যে শশ্মানটি পাকিস্তান আমলে নির্মাণ করা হয়েছিল। এই শশ্মানটি সড়ানোর জন্য পার্শ্ববর্তি বাসা বাড়ির লোকজন আমার নিকট দাবী তুলেছিল। কিন্তু আমি তাদের বলেছিলাম, আপনাদের বাড়ি আগে না শশ্মান আগে নির্মাণ হয়েছে। যদি শশ্মান আগে নির্মাণ হয়ে থাকে তাহলে শশ্মান এখানেই থাকবে। আমি শহরের মাছুলিয়া এলাকায় ২৫ লাখ টাকা খরচ করে আরেকটি শশ্মান নির্মাণ করে দিয়েছি। শহরের থানার পার্শ্বে একটি টিনসেডের ঘরে শনি মন্দির ছিল। এখানে মন্দির নির্মাণ প্রশাসনের বাঁধা ছিল। আমি সকল বাঁধা দুর করে তৎকালিন অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানকে দিয়ে এই শনি মন্দির নির্মাণ কাজ শুরু করে দিয়েছিলাম। পরবর্তিতে পৌরসভা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে এই মন্দির নির্মাণ করে দিয়েছি। শহরে ইসকন মন্দির নির্মাণেও অনেক বাঁধা ছিল, একটি পরিত্যক্ত জায়গা ছিল। আমার হাত ধরে ইসকন মন্দির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। সেখানেও পৌরসভার পক্ষ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। আমি পৌরসভায় সকল ধর্মের উর্ধ্বে উঠে দায়িত্ব পালন করেছি।
লাখাই পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি পানেশ গোস্বামীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সম্পদ রায়ের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি অহিন্দ্র দত্ত চৌধুরী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ অ্যাডভোকেট খোকন চন্দ্র গোপ, লাখাই উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামছুল ইসলাম, আব্দুল ওয়াদুদ তালুকদার আব্দাল, হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি তাজুল ইসলাম চৌধুরী ফরিদ, শেখ মোঃ ফরিদ মিয়া, শাহ আলম গোলাপ, শামছুদ্দিন আহমেদ, বিএনপি নেতা ইসলাম তাজুল মোল্লা, অ্যাডভোকেট শফিক মিয়া তালুকদার, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক জালাল আহমেদ, লাখাই উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান প্রমুখ।