কয়েক মাস পরই দক্ষিণ আফ্রিকায় পড়াশোনার জন্য যাওয়ার কথা ছিল
স্টাফ রিপোর্টার ॥ আর কয়েক মাস পরই দক্ষিণ আফ্রিকায় পড়াশোনার জন্য যাওয়ার কথা ছিল নাহিদের। অথচ এখন তার পরিবারে চলছে শোকের মাতম। ৫ আগস্ট ঢাকায় বিজয়োল্লাসে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন হবিগঞ্জের মাদরাসাছাত্র নাহিদ বিন আব্দুল আজিজ (১৭)। পরিবারের চাওয়া তাকে যেন রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদের মর্যাদা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে এমন হত্যাকা-ের জন্য শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর দাবিও জানান তারা।
নিহতের বড় ভাই মাওলানা নাঈম বিন আব্দুল আজিজ বলেন, ৫ আগস্ট নাহিদ আনন্দ উল্লাস করতে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। বিকেলে ঢাকার আদাবর থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় পুলিশের গুলিতে নাহিদ মারা যায়। ৬ আগস্ট সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে তার মরদেহ শনাক্ত করি। ওইদিন রাতেই মা-বাবার কবরের পাশে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।
তিনি বলেন, আমরা চাই আমার ভাইকে যেন রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদের মর্যাদা দেওয়া হয়। গণহত্যার জন্য দেশে ফিরিয়ে এনে শেখ হাসিনার যেন বিচার করা হয়।
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার মুড়িয়াউক গ্রামের বাসিন্দা (ঢাকার দুয়ারীপাড়া মাদরাসার বড় হুজুর) মরহুম মাওলানা আব্দুল আজিজের ছেলে নাহিদ বিন আব্দুল আজিজ। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট নাহিদ। খুলনার মাদরাসাতুল কোরআন আল-আরাবিয়ার মাদানী নিসাব প্রথম বর্ষের ছাত্র। কোটাবিরোধী আন্দোলনে দেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ২ আগস্ট মাদরাসা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ঢাকায় চলে আসেন সে। তার বড়ভাই মাওলানা নাঈম বিন আব্দুল আজিজ ঢাকার দোয়ারীপাড়া শাহী জামে মসজিদের খতিব। সেখানে থাকার কথা নাহিদের। কিন্তু নাহিদ ভাইয়ের কাছে না গিয়ে মোহাম্মদপুরে চাচার বাসায় চলে যায়। ৫ আগস্ট দুপুরে বিজয়োল্লাস করতে বাসা থেকে বের হয়। বিকেলে আদাবর থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হয় নাহিদ। তার বুকে ও পিঠে ৩টি গুলির চিহ্ন ছিল। মুখ থেতলে গিয়েছিল। পরদিন ৬ আগস্ট সকালে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে তার মরদেহ শনাক্ত করেন পরিবারের সদস্যরা। ওইদিন রাতেই তাকে লাখাই উপজেলার মুড়িয়াউক গ্রামে জানাজা শেষে বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়।