পরিবারের উদ্বেগ উৎকন্ঠা
মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ দীর্ঘ এক বছরেও সন্ধান মিলেনি মাধবপুরের নিখোঁজ যুবক মহব্বত আলীর। গত বছরের ৩০ জুলাই রাতে নিখোঁজ হয় মহব্বত আলী। চলতি বছরের ৩০ জুলাই মহব্বত আলী নিখোঁজের ১ বছর পূর্ণ হবে। মহব্বত আলীকে খুঁজে না পাওয়ায় তার পরিবারে চলছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নিখোঁজ মহব্বত আলী কয়েক বছর আগে দুবাই থেকে ফেরত আসে। এলাকায় প্রতিবাদী যুবক হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে সে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স হিসাবে কাজ করেছে। সে উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের রুসমত আলীর ছেলে। গত বছরের ১ আগস্ট মহব্বত আলীর বাবা রুসমত আলী ছেলে নিখোঁজের ঘটনায় মাধবপুর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন যার নং-৩৫। এ প্রেক্ষিতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়েও মহব্বত আলীকে উদ্ধার করতে পারেনি।
মহব্বত আলীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৮ জুলাই মহব্বত আলীর পিতা রুসমত আলী বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (কগ-৬) আদালতে একই গ্রামের কুদরত আলীর ছেলে খোকন মিয়াকে (৩৮) প্রধান আসামী করে ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ৪৩৮/২৩ (মাধব)। আদালত মাধবপুর থানাকে মামলাটি নথিভুক্ত করার জন্য আদেশ দেন। আদালতের আদেশে মাধবপুর থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। মাধবপুর থানায় মামলা নং-১৯।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মহব্বত আলী বিজিবির সোর্স হিসাবে বিভিন্ন সময়ে মাদক উদ্ধারে সহযোগিতা করায় তার সাথে বিরোধ দেখা দেয় উল্লেখিত আসামীদের। মামলার এজাহারে উল্লেখিত আসামীগণ বিভিন্ন সময়ে মাদকসহ আটক হয়। প্রত্যেক আসামীর বিরুদ্ধে মাদক মামলা রয়েছে। নিখোঁজ মহব্বত আলীর পরিবারের অভিযোগ, বিজিবির সোর্স হিসাবে মহব্বত আলী আসামীদের মাদকের চালান আটকে সহযোগিতা করায় তাদের সাথে মহব্বতের বিরোধ বাঁধে। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে সে নিখোঁজ হয়। ছেলেকে ফেরত চান মহব্বতের পিতা-মাতা। তারা মহব্বতকে ফেরত পাওয়ার আশায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন দফতরে ধরণা দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা পরিবর্তন চেয়ে মহব্বতের পিতা চলতি বছরের গত ১০ জুন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করেছেন। মামলাটি রুজু করার পর থেকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসাবে কাশিমনগর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই ফজলুল হক, পুলিশ পরিদর্শক গোলাম মস্তুফা, পুলিশ পরিদর্শক আঃ রহিম দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে বদলী হয়ে চলে গেলে নবাগত পুলিশ পরিদর্শক নুর মোহাম্মদ মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন। কিন্তু অদ্যাবদি নিখোঁজ মহব্বত আলীকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। তাই তদন্তকারী সংস্থা পরিবর্তন করে সিআইডি অথবা পিবিআইকে দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানায় মহব্বতের পরিবার।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাসিমনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুর মোহাম্মদ জানান, আমি মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হওয়ার পর থেকে ভিকটিম উদ্ধারের চেষ্টা করছি। এই মামলার এজাহারে উল্লেখিত আসামীগণ আদালতের মাধ্যমে জামিনে মুক্ত রয়েছেন। বাদী পক্ষ মামলাটি তদন্তকারী সংস্থা পরিবর্তন করার জন্যে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত আবেদন করেছে বলে জানতে পেরেছি। এখনও আমি তদন্ত কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্বে আছি। আমি ভিকটিম উদ্ধারের চেষ্টা করছি।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মাধবপুর থানার ওসি জাবেদ মাসুদ জানান, আমি এই থানায় নতুন যোগদান করেছি। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি নিখোঁজ মহব্বত আলীকে খুঁজে বের করতে।