দিনের বেলা শহরে প্রবেশ করছে ট্রাক-লড়ি ॥ গাড়ি থামিয়ে চলছে মালামাল লোড-আনলোড ॥ চলছে দানবরূপি ট্রাক্টর
জাবেদ তালুকদার ॥ নবীগঞ্জ পৌর শহরে যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন সড়কে লেগেই থাকে যানজট। অসহনীয় এই যানজটে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ব্যবসায়ী, পথচারী ও শিক্ষার্থীসহ যাত্রীসাধারণকে। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ থাকলেও যানজট নিরসনে নেই কার্যকরী ভূমিকা। প্রশাসন থেকে যানজট নিরসনে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও কোনোটিই কাজে আসেনি। যানজটের মাত্র দিন দিন বেড়েই চলেছে।
শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতাল সড়ক, শেরপুর রোড, ওসমানী রোড ও থানা পয়েন্টে ঘন্টার পর ঘন্টা লেগে থাকে যানজট। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই যত্রতত্র গড়ে উঠেছে সিএনজি অটোরিক্সা, টমটম ও বাস স্ট্যান্ড। যেখানে সেখানে ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা-মিশুক ও সিএনজি পার্কিং করে যাত্রী উঠানামা করা হচ্ছে। সড়কে যানবাহন দাঁড় করিয়ে পণ্য উঠানামা করানো নিত্য দিনের ঘটনা। বিভিন্ন স্থানে মূল সড়কের উপর বড় ট্রাক দাড় করিয়ে মালামাল লোড-আনলোড করা হচ্ছে, দেখেও দেখছেন না ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শহরের ভিতর ট্রাক-লড়ি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলেও ট্রাফিক পুলিশের সামনেই শহর দিয়ে যাতায়াত করছে ট্রাক লড়িসহ অবৈধ দানবরূপি ট্রাক্টর। অবৈধ ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দানবরূপী অবৈধ ট্রাক্টর চলাচলের কারণে সড়কগুলোতেও ভাঙ্গন দেখা দিচ্ছে।
শহরবাসীর ভাষ্য, পুলিশ মাঝে মধ্যে চেকপোস্ট বসিয়ে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরণের যানবাহনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে বৈধ কাগজপত্র না থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। কিন্তু পথচারিদের আতঙ্ক এসব অবৈধ ট্রাক্টর চলার ক্ষেত্রে চালক ও মালিকদের বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া বা বিধি নিষেধ করছেন না পুলিশ।
তীব্র যানজটের কারণে অফিসগামী এবং জরুরী প্রয়োজনে বাইরে আসা যাত্রীসাধারণের গন্তব্যে পৌছাতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মোড়ে যানজটের ফলে অফিসগামী ও যাত্রী সাধারণের আরোহী যানবাহনে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এতে চাকুরীজীবিরা নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে পৌছাতে পারছে না অন্যদিকে শহরে আগত জরুরী প্রয়োজনে আশা যাত্রী সাধারণ, স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা এবং রোগী বহনকারী এ্যাম্বুলেন্সকে বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে।
জ্যামে আটকে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, শহরে প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকে। শহরের ৫-১০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে এক-দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
মুক্তা নামে এক কলেজছাত্রী বলেন, যানজটের তীব্রতা এতোই যে হেটেও চলাচল করা যায় না। রাস্তা পারাপার হতে অনেক্ষন অপেক্ষা করতে হয়।
মিশুক চালক তালেব আলী বলেন, ভিড়ের জন্য গাড়ি চলাতে কষ্ট হয়, আবার ব্যাটারির চার্জও কমে যায়। ঠিকমতো ভাড়া পাওয়া যায় না। অনেকেই এখন যানজটের কারণে হেঁটে চলাচল করে।