স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভাবিকে মারপিট ও পুলিশকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মন্তব্য করায় পৌর কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আহমেদ হারুনকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে সদর থানার ওসি অজয় চন্দ্র দেব এর নির্দেশে এসআই কৃষ্ণধন সরকারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ পৌর বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত হারুন মোহনপুর এলাকার মৃত রইছ উল্লা’র পুত্র।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শহরের মোহনপুর এলাকার নূর মিয়ার স্ত্রী ফাতেমা খাতুনের সাথে জায়গা সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল হারুনের। এ নিয়ে ওইদিন তাদের মাঝে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে হারুন তার ভাবীর মাথায় আঘাত করলে ফাতেমা খাতুন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যান। পরে তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ফাতেমা খাতুন সদর থানায় হারুনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসআই খোরশেদ আলমসহ একদল পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করতে হারুনের বাসায় যান। এ সময় ভবিষ্যতে আর যেন এ ধরণের কোন ঘটনা না ঘটে তার জন্য হারুনকে শাসিয়ে আসে পুলিশ। পুলিশ চলে আসার পর হারুন তার ফেসবুক আইডিতে একটি লাইভ করে। লাইভে সে জানায় ‘আমার সন্তানের কিছু হলে পৌর কাউন্সিলর সহ দালাল চক্রের সদস্য সহ পুলিশ কর্মকর্তা সহ কাউকে ছাড় দিব না, প্রয়োজন আদালতে অভিযোগ করবো। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা’। এর পর পুনরায় তার ফেসবুকে ‘আমার সদা হাস্যোজ্জল ছেলের কিছু হলে, পুলিশ অফিসার সহ যারা যারা সহযোগিতা করছেন কাউকে ছাড়বো না, হুঁশিয়ার করে দিলাম। ভাড়াটিয়া হিসেবে কত টাকার বিনিময়ে আসছো,সেটাও বের করবো ইনশাআল্লাহ’ লিখে স্ট্যাটাস দেয়। হারুন লাইভে আরো বলে- হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি অজয় দেবের নেতৃত্বে একদল পুলিশ, কাউন্সিলরসহ ভাড়াটি লোকজন অন্যায়ভাবে তার বাসায় প্রবেশ করে তাদের উপর চড়াও হয়ে ভয়ভীতি দেখায়। এতে তার ছেলে ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এছাড়াও পুলিশ প্রশাসনকে নিয়ে বিভিন্ন ধরণের বাজে মন্তব্য করে হারুন। বিষয়টি মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেলে লোকজন পুলিশকে নিয়ে নানা মন্তব্য করে। বিষয়টি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে দ্রুত তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। গতকাল শুক্রবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
সদর থানার ওসি অজয় চন্দ্র দেব এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত হারুনকে নিয়মিত মামলায় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশকে নিয়ে মন্তব্যের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।