ছেলেকে ভারতে পাঠিয়ে অপহরণ মামলা
মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ মিথ্যা মামলা করায় বাদীকে এক বছরে কারাদন্ড দিয়েছেন হবিগঞ্জের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সিফাত উল্লাহ। দন্ডপ্রাপ্ত আসামী হলেন মামলার বাদি হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের সাতপাড়া গ্রামের ফরিদ উদ্দীনের ছেলে মোঃ আব্দুল হামিদ। রায় ঘোষণার সময় আসামী মোঃ আব্দুল হামিদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিজ্ঞ বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এপিপি অ্যাডভোকেট শাহ হারুনুর রশিদ সোহেল।
মামলা সূত্রে জানা যায়- আসামী আব্দুল হামিদ বাদী হয়ে ২০২০ সনের ৮ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ আদালতে একই গ্রামের হামিদের চাচাতো ভাই মো: আবুল হোসেন সবুজ সহ চার জনের বিরুদ্ধে ১০৭ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। ৯ ডিসেম্বর তার ছেলে মনতলা শাহজালাল সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র জাহিদুল ইসলাম আকাশকে কসবা উপজেলার নয়নপুর সীমান্ত ফাঁড়ি এলাকা দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিশালগড় এলাকায় প্রবেশ করিয়ে দেন। ১০ ডিসেম্বর এ বিষয়ে মাধবপুর থানায় একটি হারানো জিডি করেন। পরে ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ এ বিষয়কে কেন্দ্র করে আবুল হোসেন সবুজ, তার স্ত্রী মিনারা বেগম তার ছেলে কুতুব উদ্দিন আহমেদ জিসান সহ সাতজনকে আসামি করে হবিগঞ্জ বিচারিক আদালতে আব্দুল হামিদের ছেলে জাহিদুল ইসলাম আকাশকে অপহরণ খুন ও গুমের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মাধবপুর থানাকে অভিযোগটি এফআই আর এর নির্দেশ দেন। নির্দেশপ্রাপ্ত হয়ে মাধবপুর থানায় জি আর ২৮/২১ইং মামলা দায়ের করেন। এসআই সাইদুর রহমান তদন্ত শুরু করেন এবং ভিকটিম জাহিদুল ইসলাম আকাশকে মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার একটি চা বাগান থেকে উদ্ধার করেন। ভিকটিম উদ্ধারের পর আদালতে হাজির করলে ভিকটিম জাহিদুল ইসলাম আকাশ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে বলেন তার পিতা মামলার বাদী আব্দুল হামিদ তাকে কসবা উপজেলার নয়নপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিশালগড় এলাকায় প্রবেশ করিয়ে দেন। তাকে কেউ অপহরণ করেনি। তার ভারতে যাওয়ার বিষয় তার বাবা জানেন। এসআই সাইদুর রহমান তদন্ত শেষে জিআর ২৮/২১ ইং মামলাটির আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন এবং মিথ্যা অভিযোগকারী আব্দুল হামিদ এর বিরুদ্ধে ২১১ ধারায় প্রসিকিউশন এর আবেদন করেন। আদালতের আদেশপ্রাপ্ত হয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বাদী হয়ে আব্দুল হামিদকে আসামি করে ২১১ ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ সাক্ষ্যপ্রমাণ ও শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার বিজ্ঞ বিচারক আসামি আব্দুল হামিদকে এক বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত করেন।