৮ কেন্দ্রে শূন্য ও ১৪ কেন্দ্রে ১টি করে ভোট পাওয়ায় ব্যাপক আলোচনা
নূরুল ইসলাম মনি ॥ ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বাহুবল উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দ খলিলুর রহমান ৩০০ ভোটও পেলেন না। তিনি ৮টি কেন্দ্রে শূন্য ভোট ও আরো ১৪টি কেন্দ্রে ১টি করে ভোট পেয়েছেন। গত ২১ মে রাতে ঘোষিত নির্বাচনী ফলাফল বিশ্লে¬ষণে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
ফলাফল বিবরণী মতে উপজেলার ৬১টি কেন্দ্রে সৈয়দ খলিলুর রহমানের প্রাপ্ত ভোট ২৬৯। তিনি ৭ প্রার্থীর মাঝে ৭ম হয়েছেন। এ নির্বাচনে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৩০ ভোটের মাঝে সর্বমোট ৫৮ হাজার ৭৪৬ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। তিনি উপজেলার রূপাইছড়া রাবার বাগান অফিস, ভুলকোট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, মিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কচুয়াদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দত্তপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রশিদপুর চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়, চক্রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পূর্ব জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কোন ভোট পাননি। এছাড়া মুদাহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গাংধার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বৃন্দাবন চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জারিয়া মাদারাসা, তগলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মীরপুর দাখিল মাদরাসা, মীরপুর পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র, পাঠানটুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লাকুড়ীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম ভাদেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিহারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রামপুর চা বাগান অফিস ও কামাইছড়া চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মাত্র ১টি করে ভোট পেয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, সাধারণ মানুষের ‘অসাধারণ খেদমত’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তৎকালীন চেয়ারম্যান ও সাবেক চেয়ারম্যানকে পেছনে ফেলে বিগত ২০১৯ সনের ১০ মার্চ অনুষ্ঠিত ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সৈয়দ খলিলুর রহমান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে চমক দেখান। সে নির্বাচনে তিনি ২৩ হাজার ৪৮৩ ভোট পান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাই পান ১৭ হাজার ৬০৬ ভোট। সৈয়দ খলিলুর রহমানের চমক জাগানিয়া বিজয়ের পর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পায় প্রচারাভিযান চলাকালে তিনি জনগণের কাছ থেকে ৬০টিরও অধিক টাকার মাল্য লাভ করেন। তাতে ছিল প্রায় ২ লাখ টাকার বিভিন্ন ধরণের নোট।
অভিযোগ রয়েছে, দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হন। এতে জনরোষ বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে তার বিরুদ্ধে ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানগণ অনাস্থা প্রস্তাব উত্তাপন করেন। একই সময়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ দাখিল করেন এবং তার বিরুদ্ধে মানববন্ধণ কর্মসূচি পালন করেন।
সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে নির্দিষ্ট কোন পেশা না থাকলেও সৈয়দ খলিলুর রহমান নিজেকে মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিতেন। এলডিপি’র সাবেক জেলা সভাপতি সৈয়দ খলিলুর রহমান ১৯৯১ সনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। এর আগে তিনি ইউপি নির্বাচন এবং ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনেও অংশ নিয়ে পরাজিত হন।