মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ থেকে ॥ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থী নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে নবীগঞ্জ উপজেলা জুড়ে। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জানান দিচ্ছেন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না হলেও মাঠ পর্যায়ে গণসংযোগে নেমে পড়েছেন নবীগঞ্জের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে অনেকেই আগাম শুভেচ্ছা ও যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। তাদের সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার প্রচারণা করতেও দেখা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারেন এমন সম্ভাব্য অনেক প্রার্থীর নাম বেশ জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। এবার উপজেলা পর্যায়ে কোন দলের কারা হবেন প্রার্থী, সেই হিসাব-নিকাশ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনার ঝড় বইছে। বিএনপি নির্বাচনে না আসার ব্যাপারে ঘোষণা দেয়ায় মাঠে নেই বিএনপির কোন প্রার্থী। তবে দলীয় সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে প্রার্থী হওয়ারও গুঞ্জন রয়েছে। এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে চায় নির্বাচন কমিশন। গণমাধ্যমে এমন তথ্য জানিয়েছেন ইসি মো. আলমগীর। এসএসসি পরীক্ষা ও রোজার বিষয়টি চিন্তা করে এই সময় নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ইসি সূত্রমতে ঈদের পর অনুষ্ঠিত হতে পারে নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।
১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত নবীগঞ্জ উপজেলা। এই উপজেলায় ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ৭৭ হাজার ৮০০ জন। ২০১৯ সালে নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মো. ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ৪৭ হাজার ২৩০ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে তৎক্ষালীন উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলমগীর চৌধুরী নৌকা প্রতীকে পেয়েছিলেন ২৬ হাজার ১১৩। বিভিন্ন সূত্র বলছে, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতীক না দেয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এবারও নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম। এছাড়াও আলোচনায় আছেন হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরউদ্দিন চৌধুরী বুলবুল, সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মোছাব্বির এর পুত্র হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদ । এ পর্যন্ত এই ৩ জন প্রার্থী হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে সবদিকে। অন্য কেউ প্রার্থী হতে চাইলেও তা গণমাধ্যমকর্মী ও জনসাধারণের অজানা।
এদিকে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দেয়ায় বিএনপির কোনো সম্ভাব্য প্রার্থী বা নেতাকর্মীকে নির্বাচনী কার্যক্রমে দেখা যায়নি। বিএনপি’র তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যেও উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের আগ্রহ প্রকাশ করতে দেখা যায়নি। তবে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে হাট-বাজার, চায়ের দোকান, পাড়া-মহল্লায় আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামের পাশাপাশি বিএনপি ও তার শরীক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা করছেন সাধারণ ভোটাররা। তবে দলীয় সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে চেয়ারম্যান পদে নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মুজিবুর রহমান চৌধুরী সেফু প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন রয়েছে। যদিও বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ইতিমধ্যে গণসংযোগ-মতবিনিময়ে অংশ নিচ্ছেন আওয়ামী লীগের উল্লেখিত সম্ভাব্য প্রার্থীরা। যোগাযোগ রাখছেন তৃণমূল পর্যায়ের কর্মী-সমর্থকদের সাথে। মাঠের রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক মুখরিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের পোস্টে। এছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে পারেন এমন বেশ কয়েকজনের নাম শোনা যাচ্ছে।