শত শত চা শ্রমিকরা আগুন নেভানোর সময় কান্নায় ভেঙে পড়ে
কাজী মাহমুদুল হক সুজন ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার লালচাঁন্দ চা বাগানের ফ্যাক্টরীতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকাল অনুমান ৬টার দিকে অগ্নিকান্ডের এ ঘটনা ঘটে। এ সময় প্যাকিং গুদামে মজুত চা পাতা, মেশিনসহ বেশ কিছু সরঞ্জাম পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চুনারুঘাট, শায়েস্তাগঞ্জ ও হবিগঞ্জের তিনটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এর পূর্বে শত শত চা শ্রমিক নারী পুরুষ কলসি, বালতি ভরে পানি নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। এ সময় অনেক চা শ্রমিক কান্নায় ভেঙে পড়ে।
লালচাঁন্দ চা বাগান ও চুনারুঘাট ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল ৬ টায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা দেখে লালচান্দ চা বাগান ফ্যাক্টরীর কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষীরা ফ্যাক্টরীর ব্যবস্থাপক ও ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা স্থাানীয় শ্রমিকদের সাথে নিয়ে প্রায় ৬ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন।
চুনারুঘাট ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা বিজয় সিংহ বলেন, সকালে আগুন লাগার খবর পেয়ে তাঁরা দ্রুত সেখানে যান। এছাড়াও হবিগঞ্জ, শায়েস্তাগঞ্জ, চুনারুঘাট স্টেশন সহ ৩টি স্টেশনের একটি করে ইউনিট দুপুর পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। চা বাগান ব্যবস্থাপক মোফাজ্জেল হোসেন জানান- আগুনে ফ্যাক্টরীর মজুত চা পাতা, বিভিন্ন সরঞ্জামসহ ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে ফ্যাক্টরীতে আগুন লাগার খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদির লস্কর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলিমা রায়হানা, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব লুৎফুর রহমান মহালদার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আবু তাহের ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, থানা পুলিশ এবং গণমান্য ব্যক্তিবর্গ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদির লস্কর বলেন, আমি তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাগান কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদেরকে সমবেদনা জানিয়েছি। আমার ধারণা ফ্যাক্টরীর কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক চা শ্রমিক জানান, ফ্যাক্টরী আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শত শত শ্রমিক বেকার হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
লালচান্দ চা বাগানের ম্যানেজার মোফাজ্জেল হোসেন মোবাইল ফোনে জানান, সকালে আগুন দেখতে পেয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়া হয়। ফায়ার সার্ভিস ও শ্রমিকরা মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। তিনি আরও জানান- আগুনে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। বিষয়টি তদন্ত করা হবে। আর ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে অনেকদিন সময় লাগবে।