জাতীয় পার্টির মনোনয়ন এবং আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়েও নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারলেন না এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু
মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ থেকে ॥ হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংরক্ষিত সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী ঈগল প্রতীকে ৭৫ হাজার ৫২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৩০ হাজার ৭০৩ ভোট। ভোটের ব্যবধান ছিল ৪৪ হাজার ৩৪৯। বিপুল ভোটের ব্যবধানে সাবেক এমপি মুনিম চৌধুরী বাবুকে হারিয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়ে চমক দেখিয়েছেন কেয়া চৌধুরী। ফলাফল ঘোষণার পর নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল করেছে কেয়া চৌধুরীর সমর্থকরা। রবিবার রাতে নবীগঞ্জ উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা অনুপম কুমার দাস ও বাহুবল উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান পৃথকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন।
রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নবীগঞ্জ-বাহুবল উপজেলার ১৭৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। তবে সকালে ভোটার উপস্থিতি ছিল একেবারে কম।
নবীগঞ্জ উপজেলায় ১১৬টি কেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী ঈগল প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৪১ হাজার ৯৯টি। জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু লাঙ্গল প্রতীকে প্রাপ্ত ভোট ২৩ হাজার ১৪০। এছাড়া ইসলামি ঐক্যজোটের প্রার্থী মোস্তাক আহমেদ ফারকানী মিনার প্রতীকে পেয়েছেন ২০৪, কৃষক-শ্রমিক-জনতালীগ প্রার্থী নুরুল হক গামছা প্রতীকে ১১৫ ভোট পেয়েছেন। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো গাজী মোহাম্মদ শাহেদ ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ২০১ ভোট। এ উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ৭৭ হাজার ৮শ’। এর মধ্যে প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ২৩.৫৭%।
অপরদিকে বাহুবল উপজেলার ৬১টি কেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৯৫৩ ভোট। জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু লাঙ্গল প্রতীকে প্রাপ্ত ভোট ৭ হাজার ৫৬৩। এছাড়া ইসলামি ঐক্যজোটের প্রার্থী মোস্তাক আহমেদ ফারকানী মিনার প্রতীকে ১১৩ ও কৃষক-শ্রমিক-জনতালীগ প্রার্থী নুরুল হক গামছা প্রতীকে ৯৮ ভোট পেয়েছেন। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো গাজী মোহাম্মদ শাহেদ ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ১১৮ ভোট। এ উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬২২। এর মধ্যে প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ২৭.৫৫%।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-২ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডাঃ মুশফিক হুসেন চৌধুরীকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হয়। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন ডাঃ মুশফিক হুসেন চৌধুরী। পরে আসন সমঝোতায় ২৫ আসনের মধ্যে হবিগঞ্জ-১ আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। ফলে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন ও আওয়ামী লীগ সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু।