আবুল কালাম আজাদ, চুনারুঘাট থেকে ॥ ৪৩ বছর পর হবিগঞ্জের চুনারুঘাট-মাধবপুরে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এবার বিপুল ভোটের ব্যবধানে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীকে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। চুনারুঘাট-মাধবপুরের ১৭৭টি কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফলে ব্যারিস্টার সুমন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী ৬৯ হাজার ৫৪৩ ভোট পেয়েছেন। ভোটের হিসেবে ব্যারিস্টার সুমন ৯৯ হাজার ১৩৯ ভোট বেশি পেয়ে জয়ী হয়েছেন। ব্যারিস্টার সুমন চুনারুঘাটে ৯৭ হাজার ৭৯৫ ভোট এবং মাহববু আলী ২৪ হাজার ৮৯০ ভোট পান। চুনারুঘাটে মোট ভোটার ২ লাখ ৪৩ হাজার ৯৪৬। এর মধ্যে কাস্টিং হয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৮৬৬ ভোট। ৫১.১৯% ভোট কাস্টিং হয়েছে চুনারুঘাটে।
ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন সোস্যাল মিডিয়ার আইকন ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তিনি চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলায় নানা সামাজিক কাজ করে আলোচনায় আসেন। চুনারুঘাটে ৪৯টি ব্রীজ করে সবার নজর কাড়েন। এছাড়া তিনি চুনারুঘাট ও মাধবপুরের সাধারণ মানুষের বিপদে এগিয়ে আসতেন। করতেন সাহায্য ও সহযোগিতা। ঘর তৈরী করে দেয়া এবং আর্থিক সহযোগিতার কারণেই তিনি মানুষের মন জয়ে করে দেন। পাশাপাশি তিনি দুই উপজেলায় রাজশাহীর প্রায় ৩৫ হাজার আমের চারা বিতরণ করেন। এর বাইরে তিনি ফুটবল নিয়ে সারা দেশে আলোচিত ছিলেন। ফুটবল একাডেমী করে খেলোয়াড় তৈরী করে আলোচনায় আসেন। ব্যারিস্টার সুমন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নৌকাকে হারিয়ে বিজয়ী হন। এ বিজয়ের ফলে চুনারুঘাট মাধবপুরে ৪৩ বছর পর নৌকার ভরাডুবি হয়েছে।
রাতে প্রতিক্রিয়ায় তিনি চুনারুঘাট মাধবপুরবাসীকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, আমি এত সম্মানি ছিলাম না, আপনারা আমাকে সম্মানী বানিয়েছেন। আমি আপনাদের সম্মানের প্রতিদান দেওয়ার চেষ্টা করবো।
এর আগে অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে নৌকা নিয়ে বিজয়ী হন। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে পরাজিত হলেন। ২০০৮, ২০০১, ১৯৯৬, ১৯৮৮, ১৯৮৬ ও ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে এ আসনে সাবেক সমাজ কল্যাণমন্ত্রী এনামুল হক মোস্তাফা শহীদ নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হন।