স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাধবপুরের তেলিয়াপাড়া চা বাগান এলাকায় রাস্তায় গাছ ফেলে ঘন্টাব্যাপী ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। এসময় চা বাগানের ডিজিএম, ইউপি চেয়ারম্যানসহ কয়েকটি গাড়ি আটক করে গাড়িতে থাকা লোকজনকে গাছের সাথে বেঁধে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকারসহ কয়েক লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় দৃর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সহকারি পুলিশ সুপারসহ পুলিশে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার মাধবপুর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। ন্যাশনাল টি কোম্পানীর উপ-মহাব্যবস্থাপকের গাড়ী চালক রমজান মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। রাতে থানার ওসি মোঃ রকিবুল ইসলাম খান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, আসামী গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।
ডাকােেতর কবলে পড়া উপজেলার শাহজাহানপুর ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ হোসেন চৌধুরী বলেন- মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমার বন্ধু তেলিয়াপাড়া চা বাগানের আলম বাবুকে এগিয়ে দেয়ার জন্য আমি ব্যবসায়ী খিজির খাঁর গাড়ী নিয়ে বাগানের দিকে যাই। তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ম্যানেজার বাংলোর ফাড়ি রাস্তায় প্রবেশের কয়েক গজ পরই রাস্তায় গাছ ফেলে ১৫/২০ জন ডাকাত আমাদের উপর আক্রমণ করে হা-পা, মুখ বেধেঁ চা বাগানে ফেলে রাখে। এ সময় আমার কাছ থেকে নগদ ১ লাখ ৫ হাজার টাকা, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এর আগেই কয়েকটি সিএনজি, মোটর সাইকেলের আরোহীসহ ১২/১৫ জনকে একই ভাবে হা-পা এবং মুখ বেঁধে তাদের কাছ থেকে সব কিছু লুট করে নিয়ে যায় ডাকাতরা। কিছুক্ষণ পর ন্যাশনাল চা বাগানের ডিজিএম এমদাদুল হক মিঠু পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ম্যানেজারের বাসা থেকে দাওয়াত খেয়ে চন্ডি চা বাগানে ফেরার পথে রাস্তায় গাছ ফেলে তাদের গতিরোধ করে অন্ত্রের মুখে ৪টি মোবাইল, স্বর্ণের চেইন, কানের দুলসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায় ডাকাতরা। প্রায় ১ ঘন্টা ব্যাপি দুর্বৃত্তরা লুটপাট চালায়।
ন্যাশনাল চা বাগানের ডিজিএম এমদাদুল হক মিঠু জানান- আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ম্যানেজার দ্বীপেন শিংহ এর বাসায় দাওয়াত খেয়ে চন্ডি চা বাগানে ফেরার পথে ডাকাতরা রাস্তায় গাছ ফেলে আমাদের আটক করে। পরে আমাদেরকে গাছের সাথে বেঁধে নগদ টাকা, মোবাইল ও স্বর্ণালংকারসহ মূলবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
ন্যাশনাল চা বাগানের ডিজিএম এমদাদুল হক মিঠুর স্ত্রী নিগার সুলতানা জানান- আমার স্বামীর ২৮ বছর চা বাগানে চাকুরী জীবনে এমন ঘটনার সম্মুখীন হয়নি। ওরা আমার কানের দুল, গলার চেইন, মোবাইল নিয়ে গেছে। খবর পেয়ে তেলিয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই অনিক দেব ঘটনাস্থলে গেলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে হবিগঞ্জের সহকারি পুলিশ সুপার (মাধবপুর-চুনারুঘাট) সার্কেল নির্মলেন্দু চক্রবর্তী, থানার ওসি মোঃ রাকিবুল ইসলাম খাঁন ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
মাধবপুর থানার ওসি রকিবুল ইসলাম খান জানান, লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার সহ ঘটনার সাথে জড়িত ডাকাতদের গ্রেফতার করতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান- ঘটনার পর পরই আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। আসামীদের সনাক্ত করে আটকের চেষ্টা চলছে।