হবিগঞ্জে এমপি প্রার্থীদের নগদ টাকা স্বর্ণালঙ্কার ও সম্পদের বিবরণ ০১

হবিগঞ্জের ৪টি আসনে প্রার্থীদের নগদ টাকা স্বর্ণালঙ্কার ও সম্পদের বিবরণ জানতে পড়–ন দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ

এস এম সুরুজ আলী ॥ হবিগঞ্জের ৪টি আসনে এখন ৩৬ জন বৈধ প্রার্থী। ৪০ প্রার্থীর মধ্যে গতকাল সোমবার ৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ১২ এর দফা (৩খ) অনুসারে সব প্রার্থীকে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামার মাধ্যমে ৮টি তথ্য ও কোনো কোনো তথ্যের স্বপক্ষে কাগজপত্র দাখিল করতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে প্রার্থীদের নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও সম্পদের বিবরণ। হবিগঞ্জের ৪টি আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থীরা এফিডেভিটের মাধ্যমে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসেব নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছেন। দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ পত্রিকার পাঠকদের জন্য ৪টি আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থীদের নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও সম্পদের বিবরণ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হবে।

আজ তুলে ধরা হলো- ডাঃ মুশফিক হুসেন চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির এমপি’র নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও সম্পদের বিবরণ-

ডাঃ মুশফিক হুসেন চৌধুরী: হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ডাঃ মুশফিক হুসেন চৌধুরী। তিনি নবীগঞ্জ উপেজলার বদরদি গ্রামের মৌলভী আহমদ হুসেন চৌধুরী ও যোবেদা খাতুন চৌধুরীর ছেলে। হলফনামায় তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা এমবিবিএস উল্লেখ করেছেন। পেশায় তিনি একজন চিকিৎসক। তার বিরুদ্ধে অতীতে কোন মামলা ছিল না। বর্তমানে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। তাঁর বার্ষিক আয়ের মধ্যে কৃষি থেকে ২৬ হাজার টাকা, বাড়ি ও বাসা ভাড়া থেকে ১৯ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯ টাকা, ব্যবসা থেকে ১ লাখ টাকা, শেয়ার ও ব্যাংক আমানত ১১ লাখ ৬ হাজার ২৭৭ টাকা, চাকুরী থেকে ৫ লাখ ২০ হাজার ২০০ টাকা, অন্যান্য খাত থেকে ৩ লাখ ১০ হাজার ৮২৭ টাকা আয় হয়। তাঁর নিজ নামে নগদ টাকা ৫১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৭৭ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ৯ লাখ ৭১ হাজার ৫০২ টাকা, বন্ড, ঋণপত্র, স্টক একচেঞ্জ তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় কোম্পানির শেয়ার (পরিমাণ, অর্জনকালীন সময়ের মূল্যসহ) ৩৭ লাখ ৮ হাজার ৭০০ টাকা, গাড়ী ১৩ লাখ ৫ হাজার টাকা, ৩০ ভরি স্বর্ণ, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী (পরিমান, অর্জনকালীন সময়ের মূল্য) ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, আসবাবপত্র ৫০ হাজার টাকা, অন্যান্য ৭৬ লাখ ৩৬ হাজার ৯৮০ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে কৃষি জমি ৯ একর যার মুল্য ১ হাজার ৬৬ হাজার টাকা, পুরান মুন্সেফী এলাকায় ৪তলা ১টি বাসা অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ৩১ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা। ঢাকা ৬তলা ফাউন্ডেশন ৫তলা ১টি বাসা অর্জনকালীন মূল্য ২ কোটি ৩০ লাখ ৫ হাজার ৬৮৬ টাকা। যৌথ সম্পত্তি ৪ লাখ টাকা।
অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির: হবিগঞ্জ জেলায় গুরুত্বপূর্ণ আসন হিসেবে হবিগঞ্জ-৩ (সদর-লাখাই-শায়েস্তাগঞ্জ) আসনটিকে দেখা হয়। এ আসনে ২০০৮ সালের ৯ম, ২০১৪ সালের ১০ম ও ২০১৮ সালের একাদশ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন নিয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির। হলফনামায় তিনি বর্তমান ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করেছেন টাউন হল রোড। তিনি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রিচি গ্রামের মরহুম হাজী আমির আলী ও মরহুমা ফজল নেছার পুত্র। তিনি হলফনামায় তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এলএলবি উল্লেখ করেছেন। পেশা হিসেবে আইন ও সংসদ সদস্য। অতীতে তাঁর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা ছিল। সেই মামলা থেকে তিনি খালাস পেয়েছেন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই। তার বার্ষিক আয় অনুযায়ী কৃষি থেকে ২ লাখ টাকা, বাড়ি/এপার্টমেন্ট/দোকান ভাড়া থেকে ৩ লাখ, সংদস সদস্য হিসেবে পারিতোষিক ভাতাদিসহ ৩১ লাখ ৬৬ হাজার ৯১৬ টাকা। তাঁর ব্যাংকে নিজ নামে জমা রয়েছে ৩৩ লাখ ৪১ হাজার ৩৫৩ টাকা ও সঞ্চয় বা স্থানীয় আমানতে বিনিয়োগ, ডেল্ট ও ডিপিএস ১৯ লাখ ২০ হাজার টাকা। তার ব্যবহারের ২টি জীপ ও একটি মোটর সাইকেল রয়েছে। যার মূল্য ১ কোটি ৩৯ লাখ ৬২ হাজার ৭০৬ টাকা। নিজের রয়েছে ৩১ ভরি স্বর্ণ। বাসায় ২টি ফ্রিজ, ৪টি টেলিভিশন, ১৬টি এসি, ১৬টি সিলিং ফ্যান, ২টি ফোন রয়েছে। এগুলোর মূল্য ২৫ লাখ ২০ হাজার টাকা। আসবাবপত্র রয়েছে ২৫ লাখ ২৫ হাজার টাকার। কৃষি সম্পদ রয়েছে ১৩ কেদার যার মূল্য ৪২ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। অকৃষি জমি রয়েছে ১৭.২০শতক (হবিগঞ্জ) ও ঢাকা প্লট অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ৩৫ লাখ ৯০ হাজার ৫শ টাকা। হবিগঞ্জ পৌরসভায় দালান, আবাসিক বানিজ্যিক সংখ্যা ও অর্জনকালীন সময়ের মূল্য ১ কোটি ৪৬ লাখ ৩৮ হাজার ২৮৬ টাকা। ঢাকায় ৪৮৪৬ বর্গফুট ফ্ল্যাট যার মূল্য ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তাঁর স্ত্রীর ব্যবসা থেকে বার্ষিক আয় ২৫ লাখ ৯৭ হাজার ৯০৪ টাকা, ব্যাংকে জমা রয়েছে ৪১ লাখ ১০ হাজার ১৭৫ টাকা। এছাড়াও ১টি জীপ গাড়ী যার মূল্য ৪০ লাখ টাকা। স্ত্রীর রয়েছে ১০০ ভরি স্বর্ণ। এছাড়া রয়েছে ১টি ওয়াশিং মেশিন, ১টি ডীপ ফ্রীজ। আসবাবপত্র রয়েছে ৫০ হাজার টাকার। কৃষি জমি রয়েছে ১৫ শতক যার মূল্য ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৩২ শতক বাড়ি রকম ভূমি যার মূল্য ১ কোটি ৭০ হাজার টাকা। এমপি আবু জাহিরের ছেলের কৃষি থেকে বার্ষিক আয় ১০ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে ৯ লাখ ৭০ হাজার ৫০০ টাকা, সঞ্চয়পত্র ব্যাংক আমানত ৮৩ লাখ ৬১ হাজার ১৫৯ টাকা। এছাড়া নির্ভরশীলদের নামে আরো ১০৮ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন ইত্যাদি রয়েছে। এছাড়াও তাঁর অর্জন হিসেবে হলফনামায় ১৫ বছরের দায়িত্বকালের উন্নয়নের খন্ড চিত্র তুলে ধরেছেন।