স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ এসল্ট ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা ২টি মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আলহাজ্ব জি কে গউছ সহ ১৮৩ নেতাকর্মীর হাইকোর্টে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এম ডি আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
আসামীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, ব্যারিস্টার কাওসার কামাল, অ্যাডভোকেট সুফিয়া আক্তার হেলেন, অ্যাডভোকেট শাহীন আহমেদ ও অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন খান।
জামিনপ্রাপ্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ, মাধবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ শাহজাহান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হাশিম, যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরী, অ্যাডভোকেট হাজী নুরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট এনামুল হক সেলিম, সদস্য মহিবুল ইসলাম শাহিন, শায়েস্তাগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি মেয়র ফরিদ আহমেদ অলি, মাধবপুর পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমান মানিক, সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক প্রফেসর এনামুল হক, হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম আওয়াল, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক জালাল আহমেদ, সদস্য সচিব সফিকুর রহমান সিতু, যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান সুমন, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জহিরুল ইসলাম সেলিম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব এমদাদুল হক ইমরান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল হক শরীফ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহ রাজীব আহমেদ রিংগন, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, সিনিয়র সভাপতি হাফিজুল ইসলাম হাফিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মাহবুব, আলহাজ্ব জি কে গউছের দুই ভাই জি কে গাফফার ও গোলাম মাওলা, জেলা যুবদলের সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক টিপু আহমেদ, সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক অলিউর রহমান অলি, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক মুর্শেদ আলম সাজন, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মামুন, যুবদল নেতা ইকবাল হোসেন রুকন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জি কে ঝলক, মোজাক্কির হোসেন ইমন।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ আগস্ট বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবীতে কেন্দ্র ঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচী ছিল। ওইদিন বিকাল ৫টার দিকে হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর ঈদগার সামন থেকে জি কে গউছের নেতৃত্বে পদযাত্রা কর্মসূচী শুরু করে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি। শায়েস্তানগরস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে গিয়ে পদযাত্রা কর্মসূচী শেষ হয়। এ সময় পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে প্রধান সড়ক ছেড়ে ভিতরের রাস্তায় চলে যেতে বলে। কিন্তু হাজার হাজার লোক সমাগম হওয়ায় ভিতরের রাস্তায় জায়গা না হওয়ায় নেতাকর্মীরা প্রধান সড়কে অবস্থান করছিল। এ সময় নেতাকর্মীদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও গুলি বর্ষণ করে। এতে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের দফায় দফায় ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। প্রায় ২ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। এছাড়াও সদর থানার ওসি অজয় চন্দ্র দেব সহ কয়েক পুলিশ সদস্য আহত হন। সংঘর্ষ চলাকালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েকশ রাউন্ড রাবার বুলেট, টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেছে। পরিস্থিতি বেগতিক হলে পুলিশ রায়ট কার এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় জি কে গউছকে প্রধান আসামী করে বিএনপির ১২শ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ এসল্ট ও বিস্ফোরক আইনে ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ২১ আগস্ট সদর থানার এসআই ওয়াহেদ গাজী বাদী হয়ে বিস্ফোরক ও এসআই খুর্শেদ আলম বাদী হয়ে পুলিশ এসল্ট মামলাটি দায়ের করেন।