হবিগঞ্জ শহরে চুরি প্রতিরোধে ব্যবসায়ীদের পরামর্শ
রাত ১১টার পর দোকানপাট বন্ধ রাখতে হবে
মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ হবিগঞ্জ শহরে একের পর এক চুরির ঘটনা প্রতিরোধে ব্যবসায়ীরা কি ভাবছেন তা পর্যায়ক্রমে পাঠকদের সামনে তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছে দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ। চুরি প্রতিরোধে হবিগঞ্জ শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন আমাদের কাছে। দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ পত্রিকার পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।
হবিগঞ্জ শহরের খাদ্যগুদাম রোডের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ নূরুল আমিন ওসমান বলেন, শহরে চুরি রোধ করতে হলে কমিউনিটি পুলিশিং অ্যাকটিভ করতে হবে। শহরের সকল প্রবেশ পথে পুলিশী তল্লাশী কার্যক্রম জোরদারের পাশাপাশি রাতে টহল জোরদার করতে হবে। রাতে শুধু শহরের প্রধান সড়ক নয়, পাড়ায় মহল্লায় পুলিশী টহল নিশ্চিত করতে হবে। পাড়ায় মহল্লায় পুলিশী টহল জোরদার করা হলে চুরির হার অনেক কমে আসবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছোটখাট চুরির ঘটনাগুলোর সাথে সাধারণত মাদকসেবীরা জড়িত থাকে। তারা রাতে শহরের বিভিন্ন স্থানে আড়ালে বসে চুরির পরিকল্পনা করে। পাড়া মহল্লায় পুলিশী টহল জোরদার করা হলে মাদকসেবী ও ছিচকে চোরেরা সেই পরিকল্পনা করার সুযোগ পাবে না। ফলে চুরির হার অনেক কমে আসবে। তাছাড়া তিনি শহরের সকল শপিং কমপ্লেক্সসহ পাড়া মহল্লায় পাহারাদার নিয়োগের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তাছাড়া চুরি প্রতিরোধে তিনি শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান, মার্কেট এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানোর পরামর্শ দেন। তিনি মনে করেন শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানো হলে চুরি সম্পূর্ণ রূপে প্রতিরোধ করা না গেলেও চুরির হার অনেক কমে আসবে।
হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল এলাকার বিশিষ্ট ওষুধ ব্যবসায়ী এ.এইচ রুবেল বলেন, শহরে চুরি প্রতিরোধে পুলিশী টহল বৃদ্ধি করতে হবে। পাড়া মহল্লা সব স্থানেই পুলিশের নজরদারি বাড়াতে হবে। শহরের যে সকল স্থানে রাতে দোকানপাট খোলা থাকে রাত ১১টার পর সেগুলো বন্ধ রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ রাতে দোকানপাট খোলা থাকলে ওই দোকানে আসা কে ভাল আর কে খারাপ তা বোঝার কোন উপায় থাকে না। হয়তো দেখা যাবে একজন মাদকসেবী বা ছিচকে চোর ওই দোকানে বসে পরামর্শ করে সুযোগ বুঝে চুরি সংঘটিত করেছে। যদি দোকানে বসার সুযোগ না পেত তাহলে তারা একত্রিত হতে পারতো না। চুরির ঘটনাও ঘটতো না। তাছাড়া তিনি প্রত্যেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মার্কেট এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানোর উপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যদি সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানো হয় এবং তা পুলিশ সুপার অথবা সদর থানা হতে নিয়ন্ত্রণ করা হয় তাহলে নিঃসন্দেহে শহরে চুরির হার অনেক কমে আসবে। তিনি প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মার্কেট এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানোর পাশাপাশি পুলিশী টহল জোরদার করার দাবি জানান। শুধু তাই নয় চিহ্নিত চোরদেরও গ্রেফতারের দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, চিহ্নিত চোরদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে চুরির তথ্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে। আর উদঘাটিত তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চোরের অন্যান্য সহযোগিদেরও আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি চোরাই মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হবে। তাছাড়া শহরের বিভিন্ন মার্কেট, দোকানপাট এবং পাড়া মহল্লায় নিয়োগকৃত পাহারাদারদের সাথে প্রশাসনের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ এবং তাদের কর্ম তৎপরতা সম্পর্কে খোঁজখবর রাখার বিষয়ে পরামর্শ দেন তিনি।