স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচং উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের তেলঘরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক বরবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার অভিযোগটি দায়ের করেন তেলঘরি গ্রামের গুণ সুন্দর বৈষ্ণব।
লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, তেলঘরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় দেড় যুগ ধরে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন রঞ্জিত কুমার দাস। দীর্ঘদিন ধরে একই স্কুলে চাকুরী করার কারণে তিনি নিয়মিত স্কুলে আসা-যাওয়া না করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। ক্ষমতার আধিপত্য বিস্তার করে তিনি ২০১৪ সালে কোন প্রকার নিয়ম নীতি না মেনে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি প্রকাশ বৈষ্ণবের ছেলেকে দপ্তরী/নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগে সহযোগিতা করেন। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়টি পুরোনো জরাজীর্ণ হওয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ে আরেকটি ঘর নির্মাণ করার জন্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। ওই টাকা উত্তোলন করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত কুমার দাস ও বর্তমান সভাপতি বিশ্বজিৎ বৈষ্ণব দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নি¤œমানের একটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করেন। প্রকল্পের বরাদ্দের সিডিউল অনুযায়ী ২৭ ফুট লম্বা ও ১৫ ফুট প্রশস্ত ঘর নির্মাণ করার কথা থাকলেও তারা ২৩/১২ ফুট ঘর নির্মাণ করেছেন। প্রধান শিক্ষক ও স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মিলিতভাবে ৬০/৭০ হাজার টাকা ব্যয় করে নামমাত্র একটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করেছেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসী তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করেন। এ প্রেক্ষিতে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমানকে সাথে নিয়ে ৩ নভেম্বর সরেজমিনে স্কুলটি পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনে গিয়ে তিনি স্কুলের টিনশেড ঘর নির্মাণে অনিয়মের সত্যতা পান। এ সময় তিনি এলাকাবাসিকে আশ্বস্ত করেন টিনশেড ঘর নির্মাণে অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমানের সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি বলেন- স্কুলটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে সিডিউল অনুযায়ী নির্মাণ না করার চিত্র পাওয়া গেছে। তিনি বলেন- স্কুলটির দরজা, জানালা নির্মাণসহ সকল ক্ষেত্রেই পুকুর চুরি করা হয়েছে। স্কুলটি সিডিউল অনুযায়ী নির্মাণের জন্য প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে তাগিদ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।