কামরুল হাসান ॥ হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই পা হারানো স্কুল ছাত্রী তাজরিন আক্তার নদীর (৯) চিকিৎসার জন্য তার পাশে দাঁড়িয়েছে অনির্বাণ লাইব্রেরী। লাইব্রেরীর প্রতিষ্ঠাতা সিলেটের অতিরিক্ত ডিআইজি জয়দেব কুমার ভদ্র নদীর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। এরই পরিপ্রক্ষিতে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত ও অনির্বাণ লাইব্রেরীর ফেসবুক পেইজে নদীর চিকিৎসার জন্য সাহায্য চেয়ে একটি পোস্ট দেন। ফেসবুকে মানবিক এই পোস্টের দিকে চোখ পড়ে দেশ ও দেশের বাহিরে থাকা অনির্বাণ লাইব্রেরীর বিপুল সংখ্যক শুভাকাক্সক্ষীর। তাঁরা নদীর চিকিৎসার জন্য সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ বড়চর গ্রামে নদীর বাসায় অনির্বাণ লাইব্রেরীর পক্ষে নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন অনির্বাণ লাইব্রেরীর প্রধান উপদেষ্টা নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব অশোক মাধব রায়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ তালুকদার ইকবাল, অনির্বাণ লাইব্রেরীর উপদেষ্টা ও হবিগঞ্জ টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ নাহিজ, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোঃ ফজলুর রহমান, অনির্বাণ লাইব্রেরীর মডারেটর সদস্য বাদল রায়, শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি অজয় চন্দ্র দেব, ওসি তদন্ত আল মামুন, শায়েস্তাগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আ স ম আফজল আলী, সাধারণ সম্পাদক মঈনুল হাসান রতন, সাংবাদিক মোহাম্মদ নুর উদ্দিন, কামরুল হাসান ও ছাত্রনেতা এমদাদুল হক শীতল প্রমুখ।
অনির্বাণ লাইব্রেরীর উপদেষ্টা মোহাম্মদ নাহিজ জানান- কিছুদিন আগে স্কুল ছাত্রী নদীর চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন ছাত্রনেতা এমদাদুল হক শীতল। এই পোস্টের দিকে নজর দেন সিলেটের অতিরিক্ত ডিআইজি জয়দেব কুমার ভদ্র। তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠিত অনির্বাণ লাইব্রেরীর ফেসবুক পেইজে নদীর চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা চেয়ে পুনরায় পোস্ট দিলে ১০৮জন ব্যক্তি নদীর চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা করেন। ফলে দুই বারে নদীকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৫ মে বিকেলে দক্ষিণ বড়চর (তালুকহড়াই) গ্রামে শহরের আল মদিনা আবাসিক হোটেলের মালিক মর্জিনা খাতুনের নির্মাণাধীন বাসার ছাদে সহপাঠীদের নিয়ে বেড়াতে যায় নদী। ছাদে ফেলে রাখা বিদ্যুতের মেইন লাইনে স্পৃষ্ট হয় সে। তাৎক্ষণিক স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সিলেটে কয়েকদিন চিকিৎসা চলার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। সেখানকার চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ২৭ মে নেওয়া হয় ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। সেখানে গত ৪ জুন চিকিৎসকরা নদীর জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে দুটি পা কেটে ফেলেন।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com