লাখাই প্রতিনিধি ॥ নিহারা বেগম, বয়স ২৫ বছর। জন্মের পর থেকে বিকলাঙ্গ, কথা ও ঠিকমতো বলতে পারেন না। হেঁটে চলা তো দূরের কথা হামাগুড়ি দিয়েই চলতে পারেন না। অন্যের সাহায্য ছাড়া এক পা নড়ার শক্তিও নেই তার। শুয়ে শুয়ে জীবনের ২৫টি বছর কাটিয়ে দিয়েছেন।
সরেজমিনে উপজেলার ১নং লাখাই ইউনিয়নের বৈশ্যাপোতা পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, ছনের ছোট্ট ঘরে পাটিতে শুয়ে আছেন নিহারা বেগম। শুরুতেই দৃষ্টি পড়লো ঘরের চালা ও চারপাশের বেড়ার উপর। বুঝতে অসুবিধে হয়নি প্রতিনিয়ত বৃষ্টির পানিতে স্নাত হচ্ছেন নিহারা বেগম। এমনকি দিনের প্রখর রোদও বেড়ার ফাঁক গলে তার ভাগ্যের সাথে লুকোচুরি খেলে। নিহারা বেগমের পিতা দিনমজুর রমিজ মিয়া (৭৫) জানান, প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে তিনি অনেক কষ্টে দিনযাপন করছেন। ছেলেরা বিয়ে করে আলাদা হওয়ার পর কেউ তার খোঁজ রাখে না। বৃদ্ধ বয়সে দিনমজুরি করে তাকে সংসার চালাতে হচ্ছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কিছুদিন পূর্বে নিহারা বেগমের জন্য প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড ও ভাতার ব্যবস্থা করে দেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ হাফিজুল ইসলাম আরিফ। নিজেও একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য তদবির করে তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে জানান তিনি। ছোট্ট কুঁড়েঘরটির অবস্থা খুবই শোচনীয় যা সারানোর সামর্থ্য তার নেই। তাই নিতান্ত বাধ্য হয়ে ভাঙ্গা চালা ও বেড়া বিহীন অবস্থায় রোদ বৃষ্টিকে সঙ্গী করে প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে দিনযাপন করছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা বাবলু মিয়া জানান- আমি মাঝে মধ্যে তাদের সহযোগিতা করছি। তবে অনেক স্বচ্ছল মানুষজন সরকার প্রদত্ত ঘর পেলেও এরকম একটি অসহায় পরিবার ঘর না পাওয়ায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেন। একটি সরকারি ঘরের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুশফিউল আলম আজাদের নিকট আকুল আবেদন জানান প্রতিবন্ধীর পরিবার।