সেপ্টেম্বর মাসে শাহজাহানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনের সম্ভাবনা
এসএম সুরুজ আলী ॥ আগামী সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে মাধবপুর উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত ২৯ জুলাই ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তৌফিকুল আলম চৌধুরী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ায় ওই ইউনিয়নটির চেয়ারম্যান পদ শূন্য ঘোষণা করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। এ দিকে ইউনিয়নের উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। এবার আওয়ামীলীগের মনোনয়নের জন্য জোর লবিং করছেন শাহজাহানপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ বাবুল খান। তিনি ইতিমধ্যে দলীয় মনোনয়নের জন্য উপজেলা আওয়ামীলীগ, জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে মনোনয়নের জন্য যোগাযোগ শুরু করেছেন। তৃণমূল ছাত্রলীগের কর্মী থেকে বাবুল খান উপজেলা আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। আর এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি বিভিন্ন সময় মামলা ও হামলর শিকার হয়েছেন। এর জন্য দল তার প্রতি সুনজর দেবে বলে আশাবাদী তিনি।
বাবুল খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করার সময় ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে কলেজ ছাত্র সংসদের সমাজ কল্যাণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৫ সালে তিনি শাহজাহানপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৯৮৬ সাল থেকে ৮৮ সাল পর্যন্ত মাধবপুর উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৩-২০০৪ সালে তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মনোনীত হন। এর আগে তিনি ১৯৯১ সালে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে ২০০১ সাল পর্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সাথে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে তিনি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে অদ্যাবদি পর্যন্ত সেই দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৮৬ সালে এরশাদ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি স্থানীয় রাজাকারের মিথ্যা মামলার শিকার হন। পরবর্তীতে তিনি ওই মামলায় জামিন লাভ করেন এবং নির্দোষ প্রমাণিত হন। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি রাজনৈতিক মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় প্রাক্তন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এনামুল হক মোস্তাফা শহীদের সহযোগিতায় আদালত থেকে জামিন লাভ করেন। ২০০৩ সালে বিএনপি-জামাত সরকার ক্ষমতা থাকাকালীন সময় তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলাটি সম্পর্কে আওয়ামীলীগ সভানেত্রীকে অবগত করা হয়। শুধু তাই নয়, ২০০৫ সালে মহামান্য রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ মোতাবেক বিশেষ ট্রাইব্যুনালেও তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায়ও তিনি খালাসপ্রাপ্ত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনের পূর্বে তেলিয়াপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভার আয়োজনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন এবং জনসভায় জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এছাড়া ওই নির্বাচনকালীন সময় প্রধানমন্ত্রী হযরত শাহজালাল (রঃ) মাজার জিয়ারতে গেলে তিনি তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করেন। তিনি ২০০৩ ও ২০১১ সাথে ইউপি নির্বাচনে অংশ গ্রহন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২টি নির্বাচনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন তিনি। বাবুল খানের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি। তিনি পরমান্দপুর গ্রামের বাসিন্দা মরহুম আলতাব আলী খান ও সায়েদা খানমের পুত্র। ব্যক্তিগত জীবনে ৩ সন্তানের জনক।
বাবুল খান দৈনিক হবিগঞ্জের মুখকে বলেন- আওয়ামীলীগের রাজনীতি করতে গিয়ে বহু মামলা হামলার শিকার হয়েছি। তারপর জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দলের সকল কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ গ্রহন করছি। এবারের উপ-নির্বাচনে আমি আশাবাদী দল আমাকে মূল্যায়ন করবে। দল আমাকে মূল্যায়ন করলে আমি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবো।
এদিকে গতকাল জেলা নির্বাচন অফিসে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, শাহজাহানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদসহ জেলার আরো কয়েকটি ইউনিয়নের মেম্বার পদে উপ-নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশন আগামী মাসে উপ-নির্বাচনগুলো শেষ করার ব্যবস্থা গ্রহন করবে। অন্যথায় আগামী বছরের সেপ্টেম্বর মাসের শেষে দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শাহজাহানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, সদ্য প্রয়াত চেয়ারম্যান তৌফিকুল আলম চৌধুরীর সহ-ধর্মীনি জাহেরা আক্তার শিরিনের নামও শোনা যাচ্ছে।