কাজী মাহমুদুল হক সুজন ॥ হবিগঞ্জের বাহুবল ও চুনারুঘাট উপজেলার মধ্যবর্তী ঐতিহ্যবাহী সাটিয়াজুরী রেল স্টেশনটি বন্ধ ঘোষণার পর থেকে এলাকার জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। নষ্ট হচ্ছে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকার সম্পদ। এক সময় আশে পাশের শতাধিক গ্রামের লোকজন এ স্টেশন থেকে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করতেন। একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যমই ছিল সাটিয়াজুরী রেল স্টেশন। সে সুবাদে যাত্রীর পদভারে মুখর থাকত এ স্টেশনটি। দিনভর থাকত কর্মব্যস্ততা।
এলাকাবাসী জানান, ব্রিটিশ আমলে এ রেল স্টেশনটি চালু হয়। সে সময় একাধিক ট্রেন থামত। পরবর্তীতে আস্তে আস্তে এ স্টেশনে ট্রেনের সংখ্যা কমতে থাকে। বর্তমানে করোনা ভাইরাসে কারণে লোকার ট্রেনগুলো বন্ধ থাকায় এ স্টেশনে কোন ট্রেনই থামছে না। এতে এ রেল স্টেশনটি একটি পরিত্যক্ত রেল স্টেশনে পরিণত হচ্ছে। তাছাড়া এ রেল স্টেশনে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে স্টেশন মাস্টার না থাকায় নষ্ট হচ্ছে এ স্টেশনের সরকারি সম্পত্তি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রেল স্টেশন বলতে শুধু ব্রিটিশ আমলের সেই পাকা ভবনটিই আছে তাও আবার পশুপাখির আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। অফিস কক্ষের দরজা জানালা গুলোও ভেঙে গেছে। ভেতরে তাকালে দেখা যায় অনেক জিনিস ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে, নষ্ট হচ্ছে অনেক মূল্যবান জিনিস।
সাটিয়াজুরী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট সরকার মোঃ শহীদ ও ভাদেশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাশিম জানান, এ রেল স্টেশনটি একসময় খুবই জনপ্রিয় রেলওয়ে স্টেশন ছিল।
১৯৯৮-৯৯ সনে সরকার স্টেশনটিকে বন্ধ ঘোষণা করলে এলাকার মানুষ রেল লাইন অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলে কর্তৃপক্ষ স্টেশন মাস্টার আপ ও ডাউন ট্রেন স্টপিজ দিত। কিন্তু কয়েক বছর যেতে না যেতেই আবারও সরকার স্টেশনটিকে বন্ধ ঘোষণা করে। ফলে এলাকার শতাধিক গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে যায়। এ স্টেশন থেকে আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের মৃৎশিল্পীরা তাদের পণ্যগুলো বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করতেন। তাছাড়া ওই এলাকার কৃষকরা খুব উপকৃত হতেন এ স্টেশনের কারণে।
এলাকাবাসীর দাবি সাটিয়াজুরী রেল স্টেশনটি চালু করে ট্রেন স্টপিজ দিলে আবারও প্রাণচাঞ্চল্য পাবে স্টেশনটি। দুর্ভোগ লাঘব হবে এলাকার শতাধিক গ্রামের মানুষের।