নুর উদ্দিন সুমন ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে আগুনে পুড়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে তিনটি পরিবার। নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন খোলা আকাশের নিচে দশ সদস্যের ওই পরিবারগুলো। সহায় সম্বলহীন এসকল অসহায় মানুষের ঠাঁই হয়েছে খোলা আকাশের নিছে। খেয়ে না খেয়ে খালি হাতে পরিবার নিয়ে কনকনে শীতে স্রষ্টার দিকে তাকিয়ে আছেন তারা। কেউ একজন হয়তো আসবে তাদের পাশে দাঁড়াতে। সরেজমিনে আগুনে পোড়া উপজেলার হাতুন্ডা বিলপাড় গিয়ে চোখে পরে ৩টি পরিবারের মানবেতর দৃশ্য।
এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অনেকেই পোড়া ঘরের ধ্বংসাবশেষ সরানোর কাজ করছেন। ঘরের এরিয়াতে পড়ে আছে ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্রের পোড়া অংশ। পরিবারের ৩ সন্তান নিয়ে থাকতেন অসহায় নারী হানিফা আক্তার মনি। তিনি বলেন, “১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় সময় আমি ঘরের বাহিরে ছিলাম। মাইনসে কইলো ঘরে আগুন লাগছে। গিয়া দেহি আমার ঘরটা পুইড়া যাই তাছে। আগুন নিভাইতে যাইতে চাইছিলাম কেউ যাইতে দেয় নাই। ঘরের ফ্রিজ,টিভি, কাপড়-চোপড় সোনাদানা সব পুড়ে গেছে। আমার এক ছেলে -এক মেয়ে লইয়া খালি হাতে বারাইয়া গেছি। এখন আমরা খোলা আকাশের নিচে আছি, কই যামু। শুধু পড়নের কাপড়টা আছে, এই শীতের মধ্যে একটা চান্দর পেচাইয়া সন্তানদের লইয়া আছি। এমনে কয়দিন থাকমু আল্লাহ জানে বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ওই গৃহবধূ।
প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাজ্বী মাহমুদ হোসাইন দাখিল মাদ্রাসায় স্বল্প বেতনে শিক্ষকতা করেন নুর আলম শাকিল। তিনি বলেন, ঘটনার সময়ে আমি শায়েস্তাগঞ্জে ছিলাম। এসে দেখি ঘরে রক্ষিত কাঠ পালং সোফা সহ ঘরের সবকিছু পুড়ে গেছে। স্বপ্না বেগম নামে আরেক নারী টলমলে চোখে বলেন, সব শেষ কাপড়চোপড় সহ ঘর পুইড়া গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করে ঘরের টিন দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চুনারুঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র নাজিম উদ্দিন সামছু।
চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন মিয়া বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ঘর পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। উপজেলা পরিষদ থেকে আপাতত সহযোগিতা করা হবে। পরবর্তীতে জেলা থেকে তাদেরকে আরও সহযোগিতা করা হবে।