স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও টানা ৩ বারের নির্বাচিত হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ বলেছেন- আওয়ামীলীগ গত ১৫টি বছর জোর করে ক্ষমতায় ছিল। কেউ ভোট দিতে পারেনি, আওয়ামীলীগ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে একদলীয় শাসন কায়েম করেছিল। জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সুষ্টি হয়েছে। আমরা নির্বাচনে যাবো, মানুষের হৃদয় জয় করবো। বাংলাদেশের মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেয়ার পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে ঘরে ফিরে যাবো না।
তিনি গতকাল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্মৃতি মোটরসাইকেল কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর হাইস্কুল এন্ড কলেজ মাঠে এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়।
টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে জি কে গউছ আরও বলেন- বিএনপি শুধু রাজনীতি করে না, বিএনপি শুধু অন্যায়ের প্রতিবাদ করে না, বিএনপি মানুষের সেন্টিমেন্ট লালন ও ধারণ করে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়। আমাদের প্রিয় নেতা যিনি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বাংলাদেশের মানুষের নেতৃত্ব দিবেন জনাব তারেক রহমানের নির্দেশে ৬৪টি জেলায় ফুটবল ও ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে, আমাদের যুব সমাজ ও তরুণ সমাজকে বিনোদন দেয়া, যাতে তারা বিপথগামী না হয়।
তিনি বলেন- আমাদের যুব সমাজ দীর্ঘ ১৫টি বছর ধরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। তারা ক্ষত-বিক্ষত, প্রতিবাদ করার ভাষা ছিল না, সোসাল মিডিয়ায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে লিখার সাহস ছিল না, পরিবেশ ছিল না। যদি কেউ তাদের মনের ক্ষোভের কথা তুলে ধরেছেন তাহলে আওয়ামীলীগের লেলিয়ে দেয়া পুলিশ প্রশাসন হস্তক্ষেপ করেছে, মানুষের বাক-স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তার নামে কালো আইনের মুখোমুখি করা হয়েছে, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর কারাবরণ করতে হয়েছে।
জি কে গউছ বলেন- মানুষের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ বিস্ফোরিত হওয়ায় জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে শেখ হাসিনা কার্গো বিমানে পালিয়ে গিয়েছেন। আর আমাদের প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কাতারের আমীরের রাজকীয় বিমানে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন গিয়েছেন। এটাই হচ্ছে আল্লাহর হিসাব। কেউ যায় রাজকীয় বিমানে, আর কেউ পালিয়ে যায় কার্গো বিমানে। পাপে বাপকেও ছাড়ে না, আওয়ামীলীগ নেতারা উপলব্দি করুন, আপনারা কতটা জুলুম করেছেন।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে জি কে গউছ বলেন- বিএনপি ক্ষমতায় নেই। আজকে মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। হাজার হাজার মানুষের রক্ত ও শ্রমের এই অর্জন যেনো কারো লোভের কারণে নষ্ট না হয়। কোনো অনৈতিক কাজে বিএনপি নেতাকর্মীরা যেন জড়িত না হয়। অন্যায় এবং বিএনপি এক সাথে করা যাবে না। কেউ যদি চাঁদাবাজি, ধান্দাবাজি, মানুষকে ঠকানো, প্রতারণার আশ্রয় নেয় তাহলে শেষ পরিণতি ভালো হবে না। ইতিমধ্যে সারা বাংরাদেশে ৩ হাজারের উপরে নেতাকর্মীকে বহিস্কার করা হয়েছে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, চুনারুঘাট উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মীর সিরাজ, পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল হাই, ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী, বিএনপি নেতা সৈয়দ রিয়াজ উদ্দিন, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক জালাল আহমেদ, সদস্য সচিব সফিকুর রহমান সিতু, টিপু আহমেদ, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক গোলাম মাহবুব প্রমুখ।