বিজিবি জানিয়েছে জহুর আলী মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন ॥ মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার গুইবিল সীমান্তের ওপারে ভারতের গৌরনগর এলাকায় বাংলাদেশী এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে খোয়াই থানা পুলিশ। স্থানীয়দের ধারণা তাকে সেখানে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত ব্যক্তি হলেন চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ডুলনা গ্রামের মনসুব উল্লাহর ছেলে জহুর আলী (৫০)। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম ও পরিবারের লোকজন।
চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম জানান, ভারতের অভ্যন্তরে এক বাংলাদেশীর লাশ উদ্ধারের তথ্য আমরা পেয়েছি। মরদেহ ভারতের খোয়াই শহরের খোয়াই হসপিটালে রয়েছে। এখনো বিএসএফ আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। বিএসএফ ও বিজিবির পতাকা বৈঠকের পর লাশ নিয়ে আসা হবে।
নিহত জহুর আলীর স্ত্রী সুফিয়া খাতুন এবং স্থানীয় গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আবদুল মালেক বলেন, তাঁরা সীমান্ত থেকে খবর পেয়েছেন, বিএসএফ ও ওই এলাকার কিছু মানুষ জহুর আলীকে সীমান্ত এলাকা থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। পরে তাঁরা লাশ টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান। ভারতীয় লোকজন তাঁদের এ ঘটনা জানান।
ভারতীয় সীমান্তে জহুর আলীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পরিবারে চলছে মাতম। মঙ্গলবার বিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার পশ্চিম ডুলনা গ্রামে ভারতীয় সীমান্তে জহুর আলীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পরিবারে চলছে মাতম। মঙ্গলবার বিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার পশ্চিম ডুলনা গ্রামে।
নিহত জহুর আলীর ছেলে অলি মিয়া জানান, তার পিতা ঢাকায় একটি কোম্পানীতে সিকিউরিটির কাজ করতেন। রবিবার বাড়িতে এসেছিলেন। সোমবার রাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাতে জহুর আলী একজন সঙ্গীকে নিয়ে বাল্লার গুইবিল সীমান্তে যান। এ সময় বিএসএফ ধাওয়া দিলে জহুর আলী তাদের হাতে ধরা পড়েন। তার সঙ্গী পালিয়ে যান। বিএসএফ জহুর আলীকে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার দুপুরে তারা জানতে পারেন জহুর আলীর মরদেহ খোয়াই পুলিশ সীমান্ত থেকে উদ্ধার করেছে। তাদের ধারণা জহুর আলীকে হত্যার পর লাশ সীমান্তে ফেলে রাখা হয়।
বিজিবির বক্তব্য ঃ ভারতের অভ্যন্তরে জহুর আলীর লাশ উদ্ধার বিষয়ে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি জানায়, ৭ জানুয়ারি মোঃ জাহুর আলী (৫০), পিতা মৃত মুনছুব উল্লা, গ্রামঃ ডুলনা, ডাকঘরঃ গাজীপুর, থানাঃ চুনারুঘাট, জেলাঃ হবিগঞ্জ (তিন সন্তানের জনক); স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে জানা যায় যে, উক্ত ব্যক্তি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন এবং সে এসিএল কোম্পানী বসুন্ধরাতে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করত। উক্ত ব্যক্তি গত ৫ জানুয়ারি ঢাকা থেকে বাড়িতে আসে। গত ৬ জানুয়ারি সোমবার কোন এক সময়ে হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ এলাকার গুইবিল বিওপির মানিকভান্ডার নামক স্থানের মেইন পিলার ১৯৬৮/এম এর নিকট দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। একই দিন আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে ভারতের আনুমানিক ৩ কিঃমিঃ অভ্যন্তরে স্থানীয় জনগোষ্ঠী খোয়াই থানার অন্তর্গত গৌড়নগর এলাকায় রাস্তার পাশে একটি মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় খোয়াই থানায় খবর দেয়। সংবাদ প্রাপ্তির পর ভারতের খোয়াই থানা থেকে একটি টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে (মৃত অবস্থায়) উদ্ধার করে খোয়াই জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে “মৃত” নিশ্চিত করে। উল্লেখিত ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনের জন্য সংশ্লিষ্ট থানা কর্তৃক তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং কার্যক্রম শেষে লাশ বাংলাদেশ পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হবে। হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (৫৫ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানজিল সংশ্লিষ্ট বিএসএফ কমান্ড্যান্ট এর সাথে যোগাযোগ করে উপরোক্ত তথ্য নিশ্চিত করেন।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com