এম, এ আহমদ আজাদ, নবীগঞ্জ থেকে ॥ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রুস্তমপুর টোল প্লাজা থেকে ধর্মনগর সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই উঠে পড়ছে কার্পেটিং। ভেঙ্গে গেছে সড়কের গাইড ওয়াল। এছাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিংয়ে অসংখ্য ফাটল দেখা দিয়েছে। নিম্নমানের উপকরণের ব্যবহার ও তদারকি কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে এমনটি হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
বুধবার সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে নবীগঞ্জ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এসড়কের রুস্তমপুর টোল প্লাজা থেকে ধর্মনগর প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের টেন্ডার হয়। ৯৬ লাখ ৩ হাজার টাকা চুক্তিতে নোমান কনস্ট্রাকশন নামে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। গত এক সপ্তাহ আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যেনতেনভাবে কাজটি সম্পন্ন করে। ফলে বিভিন্ন স্থানে সড়কের কার্পেটিং উঠে গেছে। এ ছাড়া নিম্নমানের সামগ্রীর ব্যবহার ও বিটুমিন কম দেয়ায় কার্পেটিংয়ের বিভিন্ন স্থানে চিড় ধরেছে। এছাড়া সড়কের রতœা নদীর খালের কাছে নির্মিত গাইড ওয়াল ফেটে ভেঙ্গে গেছে। ভরাট করা হয়নি গাইড ওয়ালের পাশের গর্তগুলো।
ওই সড়কসংলগ্ন ছিট ফরিদপুর গ্রামের বাসিন্দারা জানান, সংস্কারকাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ হয়নি সড়কের কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। তদারকি কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে নিম্নমানের কাজ হয়েছে। সরকারের অর্থ ব্যয় হচ্ছে কিন্তু সঠিকভাবে কাজ হচ্ছে না।
ওই সড়ক সংস্কারকাজের তদারকি কর্মকর্তা নবীগঞ্জ এলজিইডি অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী সাঈদ হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কাজে গাফিলতির বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, যেসব জায়গায় কার্পেটিং উঠে গেছে, তা ঠিক করে দেওয়া হবে। যে স্থানে গাইড ওয়াল ভেঙ্গে গেছে তাও ঠিক করে দেয়া হবে।
ওই সড়ক সংলগ্ন ফরিদপুর গ্রামের বাসিন্দা ইউপি মেম্বার শেখ আব্দুল মুকিত জানান, অতি নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে রাস্তা করতে না করতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রাস্তার গাইড ওয়ালে নিন্মমানের ইট বালু ব্যবহার করায় তা ভেঙ্গে যাচ্ছে। এরই মধ্যে প্রায় ১ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু নির্মাণের কাজ হওয়ায় ৭ দিনের মাথায় সড়কের কার্পেটিং উঠে যেতে শুরু করেছে। এছাড়াও সড়কের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ফাটল দেখা দিয়েছে।
সিট ফরিদপুর গ্রামের ছাদিক মিয়া জানান, রাস্তা নির্মাণের এক সপ্তাহ পার হতে পারলো না, পিচ ওঠে যাচ্ছে। তাহলে কয়দিন টিকবে? নির্মিত প্রায় অর্ধ কিলোমিটারের মতো অংশে নিম্নমানের জিনিস দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে সম্পূর্ণটাই পিচ তুলে পুণঃনির্মাণ করতে না পারলে সড়ক নিয়ে জনভোগান্তি দূর হবে না।
ঠিকাদার নোমান হোসেন চৌধুরী রাস্তার কাজে কোন নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছে না দাবি করে জানান, যেখানে পিচ উঠে যাচ্ছে, সেখানে টিউবওয়েল ও বৃষ্টির পানি যায়, যে কারণে এমন হয়েছে। তাছাড়া বৃষ্টির দিনে কাজ করায় এমনটি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার রাস্তা পুণরায় করা হবে বলে জানান তিনি।
হবিগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ফরিদুল ইসলাম নির্মাণে ত্রুটির কথা স্বীকার করে বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। নি¤œমানের ত্রুটিপূর্ণ অংশগুলো পুনরায় মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।