ডাঃ মিলিসহ চাঁদের হাসি হাসপাতালের ম্যানেজার আব্দুল কদ্দুছের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরের চাঁদের হাসি হাসপাতালের গাইনী ডাক্তার হালিমা নাজনীন মিলির ভুল চিকিৎসায় এক গৃহবধূর জীবন বিপন্ন করার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বুধবার হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমল-১ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন গৃহবধূ নাছিমা খাতুনের স্বামী চুনারুঘাট উপজেলার দেওরগাছ ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের সৈয়দ সাইফুর রহমান শিবলু। মামলায় ডাঃ হালিমা নাজনীন মিলি ও চাঁদের হাসি হাসপাতালের ম্যানেজার মোঃ আব্দুল কদ্দুছকে আসামী করা হয়। ডাঃ হালিমা নাজনীন মিলি ডাঃ সোলাইমান মিয়ার স্ত্রী। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বাদী সৈয়দ সাইফুর রহমান শিবলুর স্ত্রী নাছিমা খাতুন গর্ভাবস্থায় প্রসব ব্যথা শুরু হলে চিকিৎসা করার জন্য গত ২১ সেপ্টেম্বর চাঁদের হাসি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর হাসপাতালের ম্যানেজার কদ্দুছের পরামর্শ অনুযায়ী নাছিমাকে ভর্তি করা হয়। ওইদিন রাতে ডাক্তার হালিমা নাজনীন মিলি রোগীনি নাছিমার আলট্রাসনোগ্রাম করে জানান তাকে সিজার করতে হবে। কিন্তু বাদী সিজার করাতে ইচ্ছুক না হলে ডাক্তার মিলি বলেন সিজার না করলে রোগীর জীবনে বড় ধরণের ক্ষতি হতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেখানে নাছিমা খাতুনকে সিজার করানো হয়। সিজারের ৩ দিন পর ২৪ সেপ্টেম্বর নাছিমাকে তার বাবার বাসা হবিগঞ্জ শহরের মোহনপুরে নিয়ে আসা হয়। ওই বাসায় ৩/৪ দিন বিশ্রামে থাকার পর নাছিমার সেলাইর স্থান দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে থাকে। এ পরিস্থিতিতে আবারও নাছিমাকে চাঁদের হাসি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এরপর ডাঃ মিলি তাকে দেখে বলেন সেলাইয়ে ইনফেকশন হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আবারও নাছিমাকে চাঁদের হাসি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর সেখানে ডাক্তার মিলির পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করানো হয় এবং তার পেটের সেলাই খুলে আবার সেলাই করা হয়। ২য় বার অপারেশন করার পর প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে দুর্বল হয়ে যান নাছিমা। এ অবস্থায় তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এসকে ঘোষকে দেখালে তিনি নাছিমাকে সিলেটে রেফার করেন। নাছিমা চাঁদের হাসি হাসপাতালে ভর্তি থাকাবস্থায় হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম হাসাপাতালে গিয়ে তাকে দেখে আসেন। সিলেট ইবনেসিনা হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর কর্মরত চিকিৎসক প্রফেসর ডাঃ জমিলা খাতুনের তত্ত্বাবধানে নাছিমাকে ৩দিন চিকিৎসা করানো হয়। পরবর্তীতে ডাঃ জমিলা খাতুন তাকে সার্জারী বিভাগে রেফার করেন। সার্জারী বিভাগে প্রফেসর ডাঃ জামাল আহমেদ চৌধুরী নাছিমাকে পর্যবেক্ষণে রাখেন এবং রোগী নাছিমার স্বজনদের জানান পূর্বের ত্রুটিপূর্ণ পর পর অপারেশনের কারণে এই জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। পরবর্তীতে ডাঃ জামাল আহমেদ চৌধুরী তাকে আবারও অপারেশন করেন। এতে নাছিমা সুস্থ হন। কয়েকবার অপারেশনসহ নাছিমার পরিবার প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ভুল চিকিৎসার কারণে স্ত্রী নাছিমার জীবন বিপন্ন করায় ডাক্তার হালিমা নাজনীন মিলির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে আদালতের শরণাপন্ন হন সৈয়দ সাইফুর রহমান শিবলু।