ঢাকা কারাগার থেকে ডাঃ এস কে ঘোষসহ ৪ জনকে হবিগঞ্জ কারাগারে হস্তান্তর
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জে ডাঃ এসকে ঘোষকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে জেলার সকল বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতালসহ প্রাইভেট প্র্যাকটিস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সাথে চিকিৎসকরা কোনো চিকিৎসাও করবেন না। এদিকে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা। বিশেষ করে শিশুরা। সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে। সদর হাসপাতালে দেখা যায় শত শত রোগী ভিড় করছেন। অন্যদিকে ডাক্তার এস কে ঘোষসহ ৪ জনকে হবিগঞ্জ কারাগারে আনা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুর দুইটায় জেলায় দায়িত্বরত চিকিৎসকদের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
জানা যায়, সম্প্রতি ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ডাঃ এস কে ঘোষকে কারাগারে পাঠায় হাইকোর্ট। একই সাথে প্রাইভেট ক্লিনিক ‘দি জাপান বাংলাদেশ’ হাসপাতালের মালিকসহ আরো তিনজনকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। তারা আগাম জামিন আনতে ঢাকায় গিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের ডাঃ দেবাশীষ দাস বলেন, ‘সরকারী হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছি। শুধু প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ থাকবে। আগামী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য এ কর্মসূচি পালন করা হবে।’
টিউমার অপারেশন করতে গিয়ে জরায়ু অপসারণ : রহিমা খাতুন নামে এক নারী জরায়ুর টিউমার অপারেশনের জন্য ওই হাসপাতালে যান। চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ওই নারীর অপারেশন করেন গাইনি ডাক্তার এসকে ঘোষ। আর ১২ তারিখই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে বাড়ি গিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে পরবর্তী সময়ে আবারও এই হাসপাতালে আসেন ওই নারী। এ সময় তাঁর অবস্থা বেগতিক দেখে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলে পাঠানো হয় তাঁকে।
এদিকে ওসমানী হাসপাতালে যাওয়ার পর দেখা যায় ওই নারীর বাম পাশের কিডনি ও জরায়ু কেটে ফেলা হয়েছে। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ অক্টোবর মারা যান তিনি। ওই ঘটনায় ২৪ অক্টোবর তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়। যাতে ওই নারীর ভুল চিকিৎসার পাশাপাশি রোগীদের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংগ্রহ করে দালালের মাধ্যমে বিক্রির অভিযোগ আনা হয় হাসপাতালটির বিরুদ্ধে।
এদিকে এই হাসপাতালটির বিরুদ্ধে আরও নানা অভিযোগের খবর মিলেছে বিভিন্ন সময়। চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি নানা অভিযোগে ওই হাসপাতালে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমান আদালত। ওই সময় অ্যানেসথেসিয়া ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ছাড়া স্টাফ নার্স ও আয়া দিয়ে সিজার অপারেশন করানোসহ বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়ায় হাসপাতালটির ব্যবস্থাপক আরিফুল ইসলামকে ছয় মাসের কারাদ- দেওয়া হয়।
ওই হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু ও সন্তান বদলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি। এ ছাড়া সিজারের সময় গত ১ অক্টোবর পেটের ভেতরে থাকা নবজাতকের মাথা কেটে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে।