স্টাফ রিপোর্টার ॥ ৫০ লাখ টাকার সম্পত্তি আত্মসাৎ ও প্রবাসীর স্ত্রী এবং মেয়েকে জিম্মি করে ধর্ষণ করার ঘটনায় আব্দুল কাইয়ূম নামে এক ভন্ডপীরকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে হবিগঞ্জের বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হারুন আর রশিদ আব্দুল কাইয়ূমের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। আব্দুল কাইয়ুম আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে। এর আগে তিনি হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন আনেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৪ বছর আগে চট্টগ্রামের মাইজভান্ডার দরবারে আব্দুল কাইয়ূমের সাথে পরিচয় হয় কুমিল্লার লাকসাম এলাকার সৌদি আরব প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী-সন্তানের। একই তরিকার অনুসারী হওয়ায় পরিচয়ের এক পর্যায়ে আব্দুল কাইয়ূমের সাথে টেলিফোনে কথা হয় সৌদি আরবে থাকা জাহাঙ্গীর আলমের। এ সময় আব্দুল কাইয়ূম প্রবাসীর পরিবারের পাশে থাকার কথা বললে তারা সরল মনে বিশ^াস করে। কিছুদিন পর আব্দুল কাইয়ূম টেলিফোনে জাহাঙ্গীর আলমকে বলে, লাকসামে থাকা তাদের সাড়ে ৭ শতক বাড়ী বিক্রি করে হবিগঞ্জে বাড়ী করার জন্য। আর না হলে তারা নির্বংশ হয়ে যাবে। প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলম সরল মনে তা বিশ^াস করে ৬৫ লাখ টাকা দামের বাড়ী মাত্র ২৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে সেই টাকা আব্দুল কাইয়ূমের হাতে তুলে দেয়া হয়। আব্দুল কাইয়ূম পশ্চিম ভাদৈ গ্রামে ৮ শতক জমি ক্রয় করেন। কিন্তু কাউকে না জানিয়ে ৬ শতক জমি রেজিস্ট্রি করেন জাহাঙ্গীর আলমের নামে এবং ২ শতক জমি রেজিস্ট্রি করেন তার নিজের নামে। পরে সেখানে ঘর তৈরি করে জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী সন্তানদেরকে নিয়ে সেখানে বসবাস করতে থাকেন। ৫ সন্তানের জনক আব্দুল কাইয়ূম কিছুদিন পর জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী ও মেয়েকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে তাদেরকে শারীরিক নির্যাতন করে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। লোক লজ্জার ভয়ে ভিকটিম কোন প্রতিবাদ না করায় দিনের পর দিনে এভাবে চলতে থাকে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে সৌদি আরব থেকে দেশে আসা জাহাঙ্গীর আলম সবকিছু শুনে তার স্ত্রী ও মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং তার স্ত্রী বাদী হয়ে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করেন- তিনি সৌদি আরব থেকে বিশ^াস করে আব্দুল কাইয়ূমের নামে লাখ লাখ টাকা প্রেরণ করেছেন। স্ত্রীর নামে প্রেরিত টাকাও সে কৌশলে নিয়ে গেছে। স্ত্রী ও ছোট মেয়েকে ধর্ষণ করার পাশাপাশি বড় মেয়ের সংসার নষ্ট করে তাকে গোপন করে রেখেছে। বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান খান সজল জানান, ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর। ভন্ডপীর আব্দুল কাইয়ূম আদালতে হাজির হলে বিজ্ঞ বিচারক দীর্ঘ শুনানী শেষে তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।