ওসি বললেন নদীর দক্ষিণ পাড়ে ও উত্তর পাড়ে আলাদা টমটম স্ট্যান্ড পরিচালনা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ বিরোধের জের ধরে একই গ্রামে গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। এই দ্বন্দ্ব থেকেই সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে সংঘর্ষে লিপ্ত লোকজন পুলিশের উপর হামলা ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে
স্টাফ রিপোর্টার ॥ টমটম স্ট্যান্ডের দখল নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ও পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে হবিগঞ্জ শহরের উমেদনগর এলাকার তিন শতাধিক লোকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে সদর থানা পুলিশ। গতকাল শুক্রবার হবিগঞ্জ সদর থানার এসআই হারুন আল রশিদ বাদি হয়ে ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩শ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন উমেদনগর গ্রামের ইকবাল মিয়া, শাহ আলম, শ্রাবণ আহমেদ, রিয়াদ হাসান। মামলার পর থেকে গ্রেফতার এড়াতে অনেকটা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে উমেদনগর। আসামী ধরতে তৎপর পুলিশ। এ নিয়ে মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ-ওসি মোঃ মাসুক আলী দৈনিক হবিগঞ্জের মুখকে জানান, খোয়াই নদীর দক্ষিণ পাড়ে ও উত্তর পাড়ে আলাদা টমটম স্ট্যান্ড পরিচালনা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ বিরোধের জের ধরে উমেদনগর গ্রামে গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। এই দ্বন্দ্ব থেকেই গত বৃহস্পতিবার সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। পুলিশ সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া লোকজন পুলিশের উপর হামলা ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে পুলিশ ৯ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। ওসি আরো জানান, সংঘর্ষ চলাকালে পরস্পরের ইটপাটকেল ও ফিকলের আঘাতে উভয়পক্ষের ১৫/২০ জন আহত হয়েছে। তারা চিকিৎসাধীন। তাদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও হামলায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি সৃষ্টি, পুলিশের উপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দানের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কয়েক বছর ধরে হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজার খোয়াইমুখ এলাকায় পৌর ঘাটলার সামনে ও রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রেখে টমটম স্ট্যান্ড স্থাপন করা হয়। উক্ত স্ট্যান্ডের দখল নিয়ে পৌর এলাকার উমেদনগরের দু’টি পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই উমেদনগর আলগাবাড়ি বনাম পূর্ব এলাকার লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রথমে স্ট্যান্ড এলাকায় সংঘর্ষ হলেও পরে নবীগঞ্জ সড়কের মাদ্রাসা এলাকায় দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে একপক্ষ অপর পক্ষের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ সদর সার্কেল) মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম পিপিএম ও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ-ওসি মো. মাসুক আলীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ৮ রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষের ৭ জনকে আটক করে পুলিশ। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে সহায়তা করেন ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি-ব্যকস হবিগঞ্জ এর সভাপতি মোঃ শামছুল হুদা। এছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখেন হবিগঞ্জ মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি শামছু মিয়া।
সংঘর্ষের পর ওই রাতেই উভয়পক্ষের সাথে আলোচনা করে ঘটনাটি শালিসে নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেন ব্যকস সভাপতি শামছুল হুদাসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী নেতা। উভয়পক্ষই শালিসের উদ্যোগকে স্বাগত জানান। আহতরা সুস্থ হলে শালিসের দিন তারিখ ঠিক করা হবে।