উপজেলা চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান বললেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমা রানী তার বক্তৃতায় পুরুষদের নিয়ে অশ্লীল ও অকথ্য ভাষা ব্যবহার করেছেন। সীমা রানীর দাবি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান তাকে লাঞ্ছিত করেছেন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির মাসিক সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মর্তুজা হাসান বনাম মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমা রানী সরকারের মধ্যে তর্কযুদ্ধ হয়েছে। এ ঘটনায় পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ হলরুমে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মতিউর রহমান খাঁন। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন- উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমা রাণী সরকার, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কুহেলিকা সরকার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী, জলসুখা ইউপির চেয়ারম্যান খেলু মিয়া প্রমুখ। এছাড়াও কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমা রানী সরকার তাঁর বক্তব্য প্রদানকালে পুরুষদের নিয়ে অশ্লীল ও অকথ্য ভাষা ব্যবহার করেন। তিনি বক্তব্যের শুরু থেকে পুরুষদের কটাক্ষ করছিলেন। পাশাপাশি তিনি নারী ও শিশু নির্যাতনের জন্য পুরুষশাসিত সমাজ ব্যবস্থাকে দায়ি করেন। এ সময় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমা রানীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করে বক্তব্যটি প্রত্যাহার ও সংযতভাবে কথা বলার অনুরোধ জানান উপজেলা চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান। এ সময় উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমা রানী সরকার উপজেলা চেয়ারম্যানের কথার উপর কথা বলেন। এক পর্যায়ে এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে উপস্থিত অন্যান্যরা দু’জনকে সভাকক্ষ থেকে নিজ নিজ অফিসে নিয়ে যান।
এ ব্যাপারে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমা রানী সরকার বলেন- সভায় আমি নারীদের অধিকার নিয়ে বক্তব্য প্রদান করি। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান আমার সাথে দুর্ব্যবহার করেন। বিষয়টি আমি স্থানীয় এমপি ও জেলা প্রশাসককে অবগত করেছি। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বলেন- দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান আমার সাথে খারাপ আচরণ করে আসছেন। কিন্তু গতকাল তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের লোকজনের সামনে আমার সাথে দুর্ব্যবহার করেছেন। আমি এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মতিউর রহমান খান জানান, সভায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমা রানী সরকার বক্তব্য প্রদানকালে বক্তব্যের একটি অংশে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মর্তুজা হাসান দ্বিমত পোষণ করেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে আমরা দু’জনকে দুটি আলাদা রুমে নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। তিনি বলেন- আমরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেছি। কিন্তু মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমা রানী চলে যাওয়ায় সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত বিষয়টি সমাধান করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মর্তুজা হাসান জানান নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ সভায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমা রানী পুরুষদের নিয়ে অশ্লীল ভাষায় বক্তব্য রাখছিলেন। তিনি পুরুষ সমাজকে খাটো করে কথা বলেন। তিনি নারী আর পুরুষদের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করতে চেয়েছেন। এ সময় আমি তাকে সংযতভাবে বক্তব্য দেয়ার কথা বলি। কিন্তু তিনি আমার সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এর বেশি কোন ঘটনা ঘটেনি। তিনি আরো বলেন- উপজেলা পরিষদের মধ্যে গ্রুপিং চলছে। সীমা রানী আমার বিপক্ষ গ্রুপের হওয়ায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন। এছাড়াও আমার প্রতিপক্ষ আমাকে হেনস্তা করার জন্য সীমা রানী সরকারকে ব্যবহার করছেন।